বাংলাদেশের বিভিন্ন মাছের ছবি | এবং মাছের নামের তালিকা ও পরিচিতি
আজকের পোস্টে বাংলাদেশের পুকুর নদী ও সাগরের বিভিন্ন মাছের নাম, পরিচিতি এবং ছবি পাবেন। এই পোস্ট থেকে বিভিন্ন মাছ সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং চিনতে পারবেন আশা করি।
শুরুতেই রুই মাছ। যদিও দামের কারনে এই মাছ সবার কেনার সামর্থ্য হয় না তবুও বলা যায় রুই বাংলাদেশের অনেকের কাছেই বেশ পছন্দের একটি মাছ।
পোস্টের প্রথম দিকের সব ছবি হাওর বাওর নামক ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া। উনারা হাওর বাওর এর মাছ অনলাইনে বিক্রি করে থাকেন। আপনারা চাইলে তাদের থেকে মাছ অর্ডার করতে পারেন।
রুই মাছের ছবি
- বৈজ্ঞানিক নাম: Labeo rohita
- বর্গ: Cypriniformes
- পরিবার: Cyprinidae
- উৎপত্তি: দক্ষিণ এশিয়া
- বাসস্থান: মিঠা পানির নদী, খাল, বিল, ও পুকুর
- আকার: ১০০ সেমি পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে
- ওজন: ৪০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে
কাতলা মাছের ছবি
- বর্গ: Cypriniformes
- পরিবার: Cyprinidae
- উৎপত্তি: দক্ষিণ এশিয়া
- বাসস্থান: মিঠা পানির নদী, খাল, বিল, ও পুকুর
- আকার: ১৮০ সেমি পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে
- ওজন: ৪০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে
মৃগেল মাছের ছবি
চিতল মাছের ছবি
বাইলা মাছের পরিচিতি ও পিকচার
তেলাপিয়া মাছের ছবি পিকচার
পুঁটি মাছের পিক
ইলিশ মাছের ছবি
- বৈজ্ঞানিক নাম: Tenualosa ilisha
- বর্গ: Clupeiformes
- পরিবার: Clupeidae
- উৎপত্তি: ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর
- বাসস্থান: সমুদ্র, মোহনা, এবং নদী
- আকার: ৬০ সেমি পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে
- ওজন: ৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে
রুপচাঁদা মাছের ছবি
ভেটকি মাছের ছবি
আরো কিছু মাছের পিক
রুই মাছের বৈশিষ্ট্য
রুই মাছের দেহ লম্বা ও চ্যাপ্টা।
মাথা ছোট ও মুখ নিচের দিকে অবস্থিত।
ঠোঁট পুরু ও মাংসল।
দুটি দীর্ঘ বালি মুখের কোণে অবস্থিত।
দেহের আঁশ ছোট ও সাইক্লয়েড।
পৃষ্ঠদেশ ধূসর ও বাদামী রঙের এবং পেট সাদা রঙের।
পাখনাগুলো বাদামী রঙের।
রুই মাছ ৩/৪ বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয়।
বর্ষাকালে এরা নদীতে প্রবাহিত হয় এবং ডিম পাড়ে।
ডিম থেকে পোনা বেরিয়ে ১০ দিনের মধ্যে সাঁতার কাটতে শেখে।
রুই মাছ বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক মাছ।
এটি বাংলাদেশের মিঠা পানির মাছ উৎপাদনের একটি বড় অংশ।
রুই মাছ দেশের অভ্যন্তরে এবং বহির্দেশে বিক্রি করা হয়।
রুই মাছ প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ।
এটি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি ভালো উৎস।
রুই মাছ হৃৎপিণ্ডের জন্য ভালো এবং এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ইলিশ মাছের বৈশিষ্ট্য
ইলিশ মাছের দেহ লম্বা ও চাপ্টা।
মাথা ছোট ও মুখ নিচের দিকে অবস্থিত।
ঠোঁট পাতলা।
দুটি দীর্ঘ বালি মুখের কোণে অবস্থিত।
দেহের আঁশ বড় ও সাইক্লয়েড।
পৃষ্ঠদেশ ধূসর রঙের এবং পেট রুপালি রঙের।
পাখনাগুলো ধূসর রঙের।
ইলিশ মাছ ৩/৪ বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয়।
বর্ষাকালে এরা নদীতে প্রবাহিত হয় এবং ডিম পাড়ে।
ডিম থেকে পোনা বেরিয়ে ১০ দিনের মধ্যে সাঁতার কাটতে শেখে।
ইলিশ মাছ প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ।
এটি ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি ভালো উৎস।
ইলিশ মাছ হৃৎপিণ্ডের জন্য ভালো এবং এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
কাতলা মাছের বৈশিষ্ট্য
কাতলা মাছের দেহ লম্বা ও চাপ্টা।
মাথা বড় ও মুখ উপরের দিকে অবস্থিত।
ঠোঁট পাতলা।
দুটি ছোট বালি মুখের কোণে অবস্থিত।
দেহের আঁশ ছোট ও সাইক্লয়েড।
পৃষ্ঠদেশ ধূসর রঙের এবং পেট রুপালি রঙের।
পাখনাগুলো ধূসর রঙের।
কাতলা মাছ বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক মাছ।
এটি বাংলাদেশের মিঠা পানির মাছ উৎপাদনের একটি বড় অংশ।
কাতলা মাছ দেশের অভ্যন্তরে এবং বহির্দেশে বিক্রি করা হয়।
পাঙ্গাস মাছের পরিচিতি:
- বৈজ্ঞানিক নাম: Pangasius hypophthalmus
- বর্গ: Siluriformes
- পরিবার: Pangasiidae
- উৎপত্তি: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া
- বাসস্থান: মিঠা পানির নদী, খাল, বিল, ও পুকুর
- আকার: 1.5 মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে
- ওজন: 45 কেজি পর্যন্ত হতে পারে
পাঙ্গাশ মাছের বৈশিষ্ট্য
পাঙ্গাস মাছের দেহ লম্বা ও চ্যাপ্টা।
মাথা ছোট ও মুখ নিচের দিকে অবস্থিত।
ঠোঁট পাতলা।
দুটি দীর্ঘ বালি মুখের কোণে অবস্থিত।
দেহের আঁশ ছোট ও সাইক্লয়েড।
পৃষ্ঠদেশ ধূসর রঙের এবং পেট সাদা রঙের।
পাখনাগুলো ধূসর রঙের।
পাঙ্গাস মাছ সুস্বাদু এবং এটি বিভিন্ন উপায়ে রান্না করা যায়।
পাঙ্গাস মাছের ভুনা, ঝাল, তরকারি, পাঙ্গাস মাছের মাথার তরকারি, ইত্যাদি জনপ্রিয় খাবার।
- পাঙ্গাস মাছ বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় মাছ।
- পাঙ্গাস মাছ ১.৫মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ এবং ৪৫ কেজি পর্যন্ত ওজন হতে পারে।
- পাঙ্গাস মাছ সর্বভুক এবং এরা শেত্তলা, পানিজ উদ্ভিদ, ছোট মাছ, পোকামাকড়, এবং জৈব পদার্থ খায়।
- পাঙ্গাস মাছ ৩ থেকে ৪ বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয়।
- পাঙ্গাস মাছ বর্ষাকালে নদীতে প্রবাহিত হয় এবং ডিম পাড়ে।
সতেজ মাছ চেনার উপায়:
চোখ:সতেজ মাছের চোখ স্বচ্ছ, উজ্জ্বল এবং চকচকে হবে।
পুরনো বা পচা মাছের চোখ মেঘলা, ঝাপসা এবং শুষ্ক হবে।
মাংস:
সতেজ মাছের মাংস দৃঢ় এবং স্থিতিস্থাপক হবে।
পুরনো বা পচা মাছের মাংস নরম, পিচ্ছিল এবং সহজেই ছিঁড়ে যাবে।
সতেজ মাছের একটি হালকা জলের গন্ধ থাকবে।
পুরনো বা পচা মাছের একটি তীব্র, বাজে এবং মাছের গন্ধ থাকবে।
সতেজ মাছের আঁশ উজ্জ্বল এবং ঝকঝকে হবে।
পুরনো বা পচা মাছের আঁশ শুষ্ক এবং ফ্যাকাশে হবে।
সতেজ মাছের পেট দৃঢ় এবং ফোলা থাকবে না।
পুরনো বা পচা মাছের পেট ফোলা এবং নরম হবে।
ফরমালিন ব্যবহার করে মাছকে দীর্ঘ সময় ধরে তাজা রাখা হয়। ফরমালিনযুক্ত মাছ খেলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
রঙ ব্যবহার করে পুরনো মাছকে নতুন দেখানো হয়। রঙযুক্ত মাছ খেলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
আশা করি এই টিপসগুলো আপনাকে সতেজ মাছ চিনতে সাহায্য করবে।
মাছে ফরমালিন দেওয়া কিনা বোঝার কিছু উপায়:
ফরমালিনযুক্ত মাছে একটি তীব্র, রাসায়নিক গন্ধ থাকে।
সতেজ মাছে একটি হালকা জলের গন্ধ থাকে।
ফরমালিনযুক্ত মাছের চোখ লাল ও ঝাপসা থাকে।
সতেজ মাছের চোখ স্বচ্ছ ও উজ্জ্বল থাকে।
ফরমালিনযুক্ত মাছের মাংস নরম ও পিচ্ছিল থাকে।
সতেজ মাছের মাংস দৃঢ় ও স্থিতিস্থাপক থাকে।
স্পর্শ:
ফরমালিনযুক্ত মাছ স্পর্শে ঠান্ডা থাকে।
সতেজ মাছ স্পর্শে ঠান্ডা থাকে না।
মনে রাখবেন, এই পদ্ধতিগুলো ১০০% নির্ভরযোগ্য নয়। ফরমালিন সম্পর্কে নিশ্চিত হতে, ল্যাবরেটরি পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
আরও তথ্যের জন্য, আপনি একজন বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।