রাগ নিয়ন্ত্রণ করার ১৫ টি উপায় এবং ইসলামিক পদ্ধতি ও দোয়া

রাগ কমানোর কার্যকরী  কিছু টিপস ২০২৪

মানুষের স্বভাবের সাথে ভালোবাসা মান অভিমান রাগ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একজন ছোট শিশুও রাগ করতে জানে। মা বকলে রাগ করে বাবার কাছে অভিযোগ করে। আর আমরা বড়রা তো রাগের সাথে এতই জড়িত যে কারনে কিভাবে রাগ কমানো যায় কিংবা রাগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায় খুজতে হয়।  আসুন জেনে নিই রাগ নিয়ন্ত্রণ করার নিয়ম। 

১। চুপ থাকুন

রেগে গেলে চেষ্টা করবেন চুপ থাকার। রাগের মাথায় আমরা ভুল ভাল চিন্তা করি, খারাপ কথা উচ্চারন করি আর এসব আমাদের রাগ, রাগের ঐ সিচুয়েশন কে আরো খারাপ করে তোলে। চেষ্টা করবেন যেভাবেই হোক রাগের সময় চুপ থাকতে। 

২। স্থান পরিবর্তন

যদি চুপ থাকা কঠিন হয়। আপনি চুপ থাকতে চাইলেও অপরপক্ষ কিংবা সিচুয়েশন চুপ থাকতে দিচ্ছে না তাহলে ঐ স্থান থেকে সরে আসুন। ঘরে থাকলে বাইরে হাটতে চলে যান, বাইরে রাগ হলে ঘরে চলে আসুন।দেখবেন স্থান পরিবর্তন এর সাথে সাথে আপনার রাগের মাত্রাও  কিছুটা কমে গেছে। 


৩। অবস্থার পরিবর্তন 

আপনি যদি রাগের সময়ে বসা থাকেন তাহলে দাঁড়িয়ে যান। যদি দাঁড়িয়ে থাকেন তাহলে বসে পড়ুন। 

রাগ নিয়ন্ত্রণ  করবো কিভাবে


৪। আউজুবিল্লাহ পড়ুন

রাগের সময়ে আমরা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি, ভাল খারাপ চিন্তা না করে রাগের মাথায় যা আসে তা বলি, করি। আর এটার সুযোগ নেই শয়তানে। সে রাগ কে আরো খেপিয়ে তুলতে আমাদের অন্তরে আরো বেশি বেশি রাগের এলিমেন্ট ঢালতে থাকে।

খেয়াল করুন আপনি আপনার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করছেন কোন একটা টপিক নিয়ে। আপনি যখন রেগে যাবেন তখন দেখবেন সেই টপিকের সাথে আরো ডজন ডজন টপিক অন্তরে জমা হতে থাকে আর রাগ ও বাড়তে থাকে। কবে কি বলছিলো কবে কি করছিলো সব একে একে অন্তরে আসতে থাকে। এটা শয়তানের কাজ। সে চাই আমাদের রাগ বাড়িয়ে আমাদের দিয়ে ভুল কাজ করাতে। তাই রাগ আসলে আউজুবিল্লাহ পড়ুন। 


৫। ৩ সেকেন্ড রুল

গবেষণায় দেখা গেছে আমাদের রাগের কারনে যে সেনসেশন তৈরি সেটা  এভারেজে ২.৫ সেকেন্ড স্থায়ী হয়। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে আমরা যদি রাগ প্রকাশ করে ফেলি তাহলে রাগ বাড়তে থাকে আর আমরা যদি ৩ সেকেন্ডের বেশি রাগ প্রকাশ না করে বরং চুপ থাকি কিংবা রাগ কে এভোয়েড করি তাহলে রাগ কমে যায়। 


৬। ব্যায়াম করা 

রাগ কিন্তু এমনি এমনি আসে না। অনেকে আছে সব কিছুতেই রাগ করে, রেগে যায়। কারন তাদের মন দেহ বিষণ্ণ থাকে। এই বিষণ্ণতা কাটানোর অন্যতম একটি উপায় হলো ব্যায়াম করা। ব্যায়াম করলে শরীর ঝরঝরা থাকে, মন ফ্রেশ থাকে। 


৭। ক্ষমা করে দেওয়া

মাফ করতে পারা বড় একটি গুন। যে যত মাফ করতে পারে সে তত রাগ থেকে, ভুল থেকে বেচে থাকতে পারে। আমরা ছোট ছোট ভুল ভ্রান্তিও ক্ষমা করতে চাই না। এর ফলে টুকটাক রাগ, ঝগড়া হতেই থাকে। প্লেটে চুল থাকলে সেই চুল টা ফেলে দিলেই হয়, কিন্তু আমরা করি উল্টা। প্লেতে চুল কেনো এই নিয়ে যুদ্ধ বাধানোর মত অবস্থা করে ফেলি। 

মাফ করতে শিখুন। ভাল থাকবেন। ইনশা আল্লাহ্‌।


৮। চিন্তা করুন।

আমরা রেগে গেলে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে এমন কিছু করি যা রাগ কমে যাওয়ার পর নিজেরাই আফসোসে ভুগি। তখন বার বার মনে হয় এটা কেন করলাম কেন বললাম। 

তাই রাগের সময়ে কিছু বলতে চাইলেই বলবেন না বা করতে চাইলেই করবেন না। বরং একটু ঠাণ্ডা হয়ে ভাবুন রাগের মাথায় যা করতে চাচ্ছেন তার ফল কি হতে পারে। ফিউচারে এর পরিনাম কি হতে পারে। এটা কি আসলেই করা জরুরী নাকি শুধুই রাগ থেকে এসব করতে চাচ্ছেন এসব ভেবে চিনতে সিদ্ধান্ত নিন। রাগের মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিলে সেই সিদ্ধান্ত ভুল হওয়ার চান্স বেশি থাকে।


৯।অজু করুন

রেগে গেলে অজু করুন। অজু করলে কয়েকটি লাভ আছে।

  1.  আপনি পবিত্র হচ্ছেন, 
  2.  অজু করতে আপনাকে কিছুক্ষন চুপ থাকতে হচ্ছে যা রাগ কমাতে সাহায্যই করে।
  3.  আপনার অবস্থার পরিবর্তন করতে হচ্ছে। এটাও রাগ কমানোর একটি উপায়
  4.  শয়তান এর প্রভাব কমে যায় 

০। সালাতে দাঁড়িয়ে যান। 

এই টিপসটি সবার জন্য না। অনেক নামে মুসলিমও রেগে গেলে সালাতে দাঁড়ানোর টিপস মেনে চলবে না। তবে আপনি যদি ইমানদার হোন তাহলে ভিন্ন কথা। আপনার উচিত ২ রাকাত নামাজ পড়া। দেখবেন নামাজ শেষ করতে করতে আপনার রাগ অনেকটাই কমে গেছে। এই পদ্ধতি বেশ কার্যকর। 


১১। ভুলে যান। 

কে কবে আপনাকে কি বলছিলো কিংবা বাকা ভাবে তাকিয়েছিলো এসব সব কিছু মনে রাখলে আমাদের মনের ভিতর আগ্নেয়গিরি তৈরি হয়। সেই আগ্নেয়গিরি ব্লাস্ট করলে রাগ নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে যায়। তাই কে কি বলছিলো কে কি করছিলো এসব সব কিছু মনে জমা রাখবেন না। মাফ করতে পারলে ভালো মাফ করে দিন। আর মাফ করতে না চাইলে মন থেকে জাস্ট এমনি ঝেড়ে ফেলে দিন। পুষে রাখবেন না। পুশে রাখলে আপনার ক্ষতি। আপনার ডিপ্রেশন বাড়বে, ডিপ্রশনের ফলে কারটিশল বৃদ্ধি পাবে আর এর ফলে চুল পরে মাথা টাক হয়ে যেতে পারে। 


১২। রাগ নিয়ন্ত্রণ করার দোয়া

রাগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইসলামিক দোয়া বা পদ্ধতি  উপরে দেওয়া আছে। বিশেষ করে আউজুবিল্লাহ পুরোটা পড়া। 


১৩। অতিরিক্ত রাগের কারন কি?

ডিপ্রেশন হতে পারে, আপনার চারপাশের পরিবেশ এর কারনে হতে পারে। শব্দ দূষণ একটি কারন হতে পারে। 


১৪। প্রেমিকার রাগ কমানোর উপায় কি? 

ব্রেকাপ করে ফেলুন। আপনার প্রেমিকা যে কারনেই রাগ করুক না কেনো সেটা ব্রেকাপের চেয়ে বড় কারন না নিশ্চয়? একটা কথা আছে না অল্প শোকে কাতর বেশি শোকে পাথর। মানুষ অল্প শোকে বেশি কাতর হয়ে গেলেও বেশি শোকে চুপ হয়ে যায়। 

এমন ভাবেই আপনার প্রেমিকা অল্প কারনে রাগ করলে বেশি শোক তথা ব্রেকাপ করলে দেখবেন সেই অল্প রাগের কারন ভুলে যাবে। তখন ব্রেকাপ নিয়ে পরে থাকবে, কিভাবে ব্রেকাপ বন্ধ করবে সেদিকেই নজর দিবে। আগে কি করছেন না করছেন সেইটা নিয়ে রাগ করে বসে থাকার স্থানে ব্রেকাপ এর চিন্তা দখল করে নিবে। 


১৫। ছেলেদের রাগ কমানোর উপায় 

ছেলে বলতে সেই ছেলে কি হয়? বয়ফ্রেন্ড নাকি স্বামী নাকি অন্য কেউ? বফ হলে উপরের টিপস ফলো করলে করতেও পারেন। কাজ হতে পারে হইতো!!

আর বফ না হলে যেই টপিক নিয়ে রাগ সেটা ক্লিয়ার করুন। খুলে বলুন, এবং শুনুন। 

Next Post Previous Post