নামাজ এবংআমাদের উদাসীনতা

নামাযের গুরুত্ব ও আমাদের অবহেলা 



ভার্সিটির ক্লাসে আমাদের এক স্যার নাম ছিল ওনার মোঃ সাইদ(আল্লাহ ওনাকে সুস্থ রাখুন)।

একদিন স্যার ক্লাসে এসে পড়ানোর আগে সকলকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
আজ কে কে ফজরের নামাজ পড়েছো? দাড়াও কিংবা হাত তুলো।
লজ্জায় পড়ে গিয়েছিলাম সেদিন কারণ আমি ওইদিন নামাজ পড়েছিলাম না আসলে ক্লাস ক্যাম্পাস প্রাইভেট এগুলো নিয়ে যেন আমার সবটা ছিল।
বাসা থেকেই নামাজের জন্য কখনো তোরজোর করত না কিংবা ওভাবে বলত না।
এখন চিন্তা করি একজন মুসলিম পরিবারের হয়েও কতটা হতভাগা ছিলাম যে নামাজের মতো একটা পবিত্র সম্পর্কে যেখানে রব এবং বান্দার মধ্যে সম্পর্ক হয়। বান্দা তার আকুল আবেদন পেশ করতে থাকে একমনে, আর রব সেটা গ্রহণ করতে থাকেন এত পবিত্র একটা বাধণ থেকে কতটা দূরে ছিলাম।
যাহোক পরের দিন স্যার আবার একই কথা জিজ্ঞেস করলে সেদিনও না পড়ার কারণে দাঁড়িয়ে যাই।
আর মনে মনে ভাবতে থাকি নাহ কাল পড়বোই। এতে যা কিছু হয় হোক।
ঠিক পরের দিন নামাজ পড়ে গেলাম। ঢিপ ঢাপ কয়েকটা সিজদা দিয়ে ক্লাসে চলে গিয়েছিলাম।
নামাজে মনোযোগ কিন্তু একটুও ছিল না। ছিল স্যারের কথা যে আমায় আজ নামাজ পড়তেই হবে।
যাহোক সেদিন স্যার জিজ্ঞেস করলে বুক ফুলিয়ে গর্বের সাথে দাড়িয়েছিলাম, আর বলেছিলাম নামাজ পড়েছি স্যার।
আর যারা সেদিনও নামাজ পড়ে আসছিল না তাদের প্রতি ভ্রু কুঞ্চিত করে ছিলাম।
এরপর তো অনেকটা দিন গত হলো এই প্রায় বছর দু কি তিনেক হবে। এখন বুঝতে পারি আমার সেই ইবাদতের ই শব্দটাও তখন হয়েছিল না কবুল হবে কিভাবে কে জানে?
ইমাম ইবনুল কাইয়্যুম রাযি এর খুশু খুজু বইটা পড়ে নামাজ সমন্ধে যেটা জানতে পারলাম। নামাজ মানে রবের সাথে কথোপকথন
বইটা পড়ছিলাম আর মনে মনে ভাবছিলাম আমি এখনি নামাজ পড়ছি ঠিক ওইভাবে যেভাবে উনি পড়তে বলেছেন
যাহোক মূল কথায় আসি
আমরা অনেকেই এখন কর্মব্যস্ততায় নামাজ কথাটাকে ভূলে যাই।
আবার অনেকে আছি যারা নামাজ পড়ি ঠিক এমন ধরুন ক্লাসে স্যার বলেছে এই টপিকে যদি ক্লাসে লেখা না পায় তো ক্লাসে অপমান তো করবোউ সাথে ক্লাস থেকে বের করে দিব। এদিকে কাজটি করতে হবে আবার পড়াও মুখস্থ হয়নি তাই বন্ধুর থেকে টুকে নিয়ে স্যারকে খাতা প্রদর্শন করা।
এমনটা ঠিক আমরা নামাজের মধ্যে করে থাকি মানে কয়েকটা ধাপ ধিপ ঢিপ মেরেদি আর লোক জিজ্ঞেস করলে বলে থাকি আমি নামাজ আদায় করেছি।
আহ কত বেঈমান আমরা ভেবে দেখুন তো
আচ্ছা আপনার কি আপনার রবের সাথে সাক্ষাৎ, কথা বলতে ইচ্ছে করে না?
জিকিরের মাধ্যমে রবকে কাছে পাওয়া যায় ঠিক
রোজার মাধ্যমে তার প্রিয় হওয়া যায় ঠিক
হজ্জ যাকাত সবকিছুর মাধ্যমে প্রিয় হতে পারবেন
কিন্তু তার সাথে কথা বলছেন সেই সুযোগ টাও পাচ্ছেন দিন ৫ বার এমন মনিমুক্তা পেয়েও হারিয়ে ফেলছেন অবহেলায়?
খারাপ লাগে না?
নাকি অনূভুতি শূন্য হয়ে গিয়েছেন?
বদলান এখনি।
আর নামাজে খুশু খুযু তথা মনোযোগ ব্যাপার আনার জন্য ইমাম ইবনুল কাইয়্যুম রাযি এর বইটা পড়তে পারেন।
লেখাঃ তাসকি
Next Post Previous Post