বাংলাদেশের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি : ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ও বৈদেশিক সম্পর্ক
- বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি pdf
- পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনীতির মধ্যে পার্থক্য
- ভারতের পররাষ্ট্রনীতি
- বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি
- বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ও বৈদেশিক সম্পর্ক
- ভারতের পররাষ্ট্রনীতির বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের মাথা হচ্ছে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। আর সেই কংগ্রেসের মাথা কারা? কংগ্রেসের মাথা হচ্ছে ইসরাইল। উল্লেখ্য যে কংগ্রেস হলো বিজেপির চেয়েও বেশি উগ্র হিন্দুত্ববাদী এবং প্রকৃতপক্ষ কংগ্রেসই মায়ের মতো পরম আদরে হিন্দু মহাসভা, আর এস এস ও বিজেপিকে লালন পালন করেছে।
বিগত দুটি চারণ কংগ্রেস ক্ষমতায় নেই ঠিকই, তাই বলে কিন্তু পদলেহন থেমে নেই। এখন গেরুয়া চাড্ডিদের পদলেহন চলছে। গেরুয়া শিবিরের নিয়ন্ত্রক কারা? ওই যে পরগাছা ইসরাইল।
বাস্তব হলো ইজরায়েলি হস্তক্ষেপ কাজে লাগিয়ে বিজেপি সরকার দুটি টার্ম ক্ষমতায় আছে।
বাংলাদেশেও তাহাজ্জুতী হযরতের ইশারায় কিছু দালাল সাংবাদিক এবং কুবুদ্ধিজীবী ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের কথা বলে থাকে। যেমন তথাকথিত ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর এবং আনিস আলমগীর প্রমুখ।
প্রিয় পাঠক! ইসরাইলের অবৈধ দখলদারীত্বের প্রতি শতভাগ আনুগত্য প্রদর্শন করতে না পারলে সে দীর্ঘমেয়াদি চামচাদেরকও ছেড়ে কথা বলে না।
প্রমাণ চান?
আসুন, টাইম ট্রাভেল করা যাক। Let me take you to a long ride!
“সময়কাল-১৯৬৭”
১৯৬৭ সালে ছয় দিনের ইসরাঈল-আরব যুদ্ধের সময় ৮ জুন ইসরাঈলি সামরিক বাহিনী মার্কিন গোয়েন্দা জাহাজ ‘ইউএসএস লিবার্টি’র ওপর আক্রমণ চালিয়ে ৩৪ জন মার্কিন সৈন্যকে নিহত এবং ১৭১ জন মার্কিন সৈন্যকে আহত করে।
তারা জাহাজটিতে ৮২১ টি রকেট ও মেশিনগানের ক্ষতি করে। এর উদ্দেশ্য ছিল তাদের এই সন্ত্রাসী আক্রমণের দায়িত্ব আরব/মুসলিম সেনাবাহিনীর ওপর চাপিয়ে দেয়া।
জাহাজটি থেকে রক্ষা পাওয়া সৈন্যরা এবং মার্কিন সরকারের অনেক অফিসার, যার মধ্যে প্রাক্তন সেক্রেটারি অব স্টেট ডিন রাস্ক ও প্রাক্তন জেসিএস চেয়ারম্যান অ্যাডমিরাল টমাস মুরারও ছিলেন। তিনি বলেন যে, মার্কিন জাহাজ ‘লিবার্টি’র ওপর সেই আক্রমণ কোন দুর্ঘটনা ছিলনা।
ইসরাঈল যখন ‘লিবাটি’র ওপর আক্রমণ করে তখন জাহাজের ব্রিজের ওপর দায়িত্বে ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেমস এম ইলেম। ২৭ বছর কমিশনড অফিসার হিসাবে কাজ করার পর তিনি ১৯৭৮ সালে মার্কিন নৌবাহিনী থেকে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন।
পরে তিনি Assault on the Liberty নামে তার বিখ্যাত বইয়ে (Random House 1980-Ballantine 1986) বলেন, “USS Liberty র ওপর ইসরাইল ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ করে এবং পরে সে ব্যাপারে মিথ্যা বলে। আজ থেকে অথবা আগামীকাল, আমেরিকানরা তাদের সরকার ও কংগ্রেসে তাদের প্রতিনিধিদের ওপর চাপ দেবে যাতে তারা এর কারণ খুঁজে বের করে।”
পত্রিকাটি আরও বলে, এখন সময় এসেছে ইসরাইল, দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য বিশেষ করে আরব-ইসরাইলি সংঘর্ষ, কাশ্মীর, আফগানিস্তান ইত্যাদি সম্পর্কে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্রের নীতির পরিবর্তন করা।
পত্রিকাটি এ প্রসঙ্গে মার্কিন বিদেশ সচিব কলিন পাওয়েলের কাছে দাবি জানায় যে, যে ইসরাইলি রাষ্ট্র বহু প্যালেস্টিনীয় নেতাকে খুন করেছে, হাজার হাজার নাগরিককে খুন করেছে, প্যালেষ্টিনীয়, আরব, মুসলমান, কাশ্মীরি ও খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে অনেক মারাত্মক সন্ত্রাসী ও অপরাধী তৎপরতা চালিয়েছে তাকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করা হোক।
পত্রিকাটি এ কথাও বলে যে, আমরা মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া এবং অন্যত্র ইসরাইলের হয়ে যুদ্ধ করতে পারি না।
স্পষ্টত ‘ফ্রি প্রেস নেটওয়ার্ক’ কোন বিপ্লবী, এমনকি মার্কিন সরকারবিরোধী সংবাদ সংস্থা নয়। কিন্তু তারাও ইসরাইল সম্পর্কে উপরোল্লিখিত যেসব মন্তব্য ও বক্তব্য ১১ সেপ্টেম্বর,২০০১ তারিখেই প্রদান করেছে সেটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
এ প্রসঙ্গে মার্কিন গোয়েন্দা জাহাজ ‘লিবার্টি’র ওপর ১৯৬৭ সালে ইসরাঈলের আক্রমণের বিষয়টি আরেকটু বিশদভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে। কারণ এ ইতিহাসের আলোকে সঙ্গত কারণেই ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনা আর ডালাসের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্কের ব্যাপারটি যে উড়িয়ে দেয়ার মতো নয় সেটা ভালভাবেই বোঝা যাবে।
১৯৯৭ সালের ৮ জুন তারিখে অর্থাৎ ‘লিবার্টি’র ওপর ইসরাইলি আক্রমণের ঠিক ত্রিশ বছর পর অ্যাডমিরাল টমাস মুরার একটি মেমোরেন্ডামে বলেন যে, তিনি কখনই বিশ্বাস করেননি যে, ‘লিবার্টি’র ওপর আক্রমণ ভুলবশত হয়েছিল। খুব অদ্ভূত ধরণের দেখতে ছিল ‘লিবার্টি’। যোগাযোগের গোয়েন্দা জাহাজ হিসাবে তাতে এত রকমের অ্যান্টেনা ছিল, যাতে তাকে দেখতে মনে হতো বড় চিংড়ি মাছের মতো। কাজেই তাকে চিহ্নিত করতে ভুল হওয়ার কোন প্রশ্নই ছিল না।
ইসরাঈলের খুব ভালভাবেই জানা ছিল যে, সেটা আমেরিকান জাহাজ। জাহাজটিতে উড়ানো মার্কিন পতাকা আকাশ থেকে খুব সহজেই দৃষ্টিগোচর ছিল। আক্রমণের আগে ইসরাঈলি উড়োজাহাজ প্রায় আট ঘন্টা ধরে আটবার চক্কর দিয়েছিল। মুরার বলেন, ইসরাইল সে সময় সিরিয়া থেকে গোলান হাইটস দখল করে নেয়ার প্রস্ততি নিচ্ছিল। তারা জানত যে, ‘লিবার্টি’ যুদ্ধরত যে কোন দেশের রেডিওকৃত তথ্য ধরে ফেলতে পারত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জনসন ইসরাঈল কর্তৃক গোলান হাইটস দখলের বিরোধী ছিলেন এবং সে কারণেই এ ব্যাপারে কোন তথ্য অবগত হয়ে ‘লিবার্টি’ যাতে মার্কিন সরকারকে সেটা জানাতে না পারে সেজন্যই ইসরাঈল নেতা মোশে দায়ান ‘লিবার্টি’কে অকেজো করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই আক্রমণে নিহতের সংখ্যা ছিল ৩৪ এবং আহতের সংখ্যা ১৭১ জন।
এ প্রসঙ্গে মুরার বলেন যে, সেদিন পর্যন্ত অর্থাৎ ১৯৯৭ সালের ৮ জুন পর্যন্ত মার্কিন কংগ্রেসে ‘লিবার্টি’র ওপর আক্রমণের বিষয়ে কোন আনুষ্ঠানিক শুনানি হয়নি। এটা ছিল এক অদৃষ্টপূর্ব ব্যাপার।
তিনি বলেন যে, ‘পিউবলো’ নামে ‘লিবার্টি’র মতো একটি জাহাজ উত্তর কোরিয়া আটক করার পর তাকে কংগ্রেসে সাক্ষ্য দিতে হয়েছিল এবং সে সময় তারা সকল প্রকার সম্ভাব্য প্রশ্ন তাকে করেছিল। তারা এ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করেছিল যে, কাছাকাছি এলাকায় থাকা যুদ্ধ বিমানবাহী জাহাজ থেকে সে সময়, ‘পিউবলো’র সাহায্যের জন্য যুদ্ধ বিমান কেন পাঠানো হয়নি।
‘লিবার্টি’র ঘটনার সময় দু’দুবার যুদ্ধ বিমান আকাশে পাঠানো হলেও তাদের ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এবং এ নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্যাকলসারা ও প্রেসিডেন্ট জনসন!! মুরার তার মেমোরেন্ডামে দাবি করেন যে, এর কারণ জানার অধিকার আমেরিকার জনগণের আছে।
তাছাড়া যেখানে ‘লিবার্টি’র নাবিক ও নৌ-সেনাদের প্রাপ্য ছিল বীরের সম্মান। সেখানে তাদের সম্পর্কে পালন করা হয় এক অদ্ভূত নীরবতা।
তিনি আরও বলেন যে, ওয়াশিংটনের আরলিংটন সমাধি ক্ষেত্রে ‘লিবার্টি’ জাহাজে নিহত ছয়জনের কবর আছে। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার যে, সেখানে শুধু লেখা আছে “তাদের মৃত্যু হয়েছিল পূর্ব ভূমধ্যসাগর অঞ্চলে”! কিভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছিল অসুখে না অন্য কোন কারণে তার কোন কথা সেখানে উল্লেখ নেই!!
‘লিবার্টি’র কমান্ডার ছিলেন ম্যাকগোলগল। তিনি গুরুতর আহত অবস্থাতেও অসীম সাহসের সঙ্গে জাহাজের ব্রিজের ওপর থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করে জাহাজটিকে আক্রমণের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন।
মুরার বলেন, তিনি বিভিন্ন সময় অন্তত ১৫ বার হোয়াইট হাউসে গেছেন প্রেসিডেন্ট কর্তৃক সাহসিকতার জন্য আমেরিকানদের কংগ্রেশনাল পুরস্কার দেয়ার সময়। কিন্ত ম্যাকগোলগল এর সময় সে পুরস্কার প্রেসিডেন্ট কর্তৃক হোয়াইট হাউসে না দিয়ে দেয়া হল নৌবাহিনী সচিবের দ্বারা
ওয়াশিংটনের নেভী ওয়ার্ডে! অন্যরা হোয়াইট হাউসে মেডেল পেলেও তাঁর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম করা হল। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাঈল লবির প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রেসিডেন্ট জনসন চিন্তিত ছিলেন।
গোয়েন্দা জাহাজ ‘লিবার্টি’র ওপর ইসরাঈলের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আক্রমণ সম্পর্কে অ্যাডমিরাল মুরার বলেন যে, এই ধরণের কাজ করার সাহস তাদের হয়েছিল কারণ, তারা জানত যে, মার্কিন জনগণ এর বিরুদ্ধে যাতে ক্ষিপ্ত হয়ে না ওঠে সে ব্যাপারে ওয়াশিংটন সহযোগিতা করবে। অর্থাৎ ঘটনাটি চেপে যাওয়ার ব্যাপারে ওয়াশিংটন ইহুদী লবিকে যথাসাধ্য সাহায্য করবে।
আর ৯/১১?
৯/১১ এ আমেরিকাকে মোসাদ মূলী বাঁশ দেওয়ার পেছনে বহুমাত্রিক কারণ রয়ে গিয়েছে।
প্রথমত, খোদ আমেরিকাকে সাইজ করা।
দ্বিতীয়ত, সারা বিশ্বব্যাপী মুসলিম দেশগুলো দখল করার বাহানা তৈরী করা।
বাহানা তৈরী করেছে কে? দাদাদের দাদা ইহুদীরা।
যেমন পাকিস্তানের সাবেক আই.এস.আই প্রধান জেনারেল গুল মন্তব্য করেছেন, ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফ্লোরিডা কেলেঙ্কারীর কথা সবাই জানে। ওই কারচুপিতে ইহুদীরা বুশের পক্ষে ব্যাপক লবিং করে। কিন্তু বুশের মন্ত্রীসভায় কোন ইহুদী না থাকায় ইহুদীরা দারুণভাবে ক্ষুব্ধ হয়।
এদিকে আমেরিকার পক্ষ থেকে যখন ইসরাঈলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে রিভার চুক্তি মেনে নেয়ার আবেদন করা হয়েছিল তখন নেতানিয়াহু ক্ষুব্ধ হয়ে সি.এন.এনকে বলেছিল ইহুদীরা ওয়াশিংটনে আগুন ধরিয়ে দিবে।
এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে সি.এন.এন সাক্ষাতকার প্রচার করলেও তারা তা প্রশমিত করতে পারেনি, ইহুদীদের চাপা ক্ষোভ। আর সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে ওরা হামলায়।
ইসরাঈলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ গত ১১/৯/২০০১ এ নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে বলে সৌদি আরবের বহুল প্রচারিত পত্রিকা ওকাজ এ অভিযোগ করেছে।
পত্রিকার সম্পাদকীয়তে বলা হয়, আমেরিকার অভ্যন্তরের কিংবা ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রক্ষাকারী কোন মহলের সহায়তা ছাড়া এত নিখুঁত, নির্ভুল ও যথাযথভাবে এ ধরণের ভয়াবহ হামলা চালানো সম্ভব নয়।
এদিকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই পরিচালক রবার্ট মুলার বলেছেন, তাদের তদন্তকারীরা ১১ সেপ্টেম্বরের হামলায় জড়িত ১৯ জন সন্ত্রাসীর প্রকৃত পরিচয় বের করেছে এবং আমেরিকার বাইরে যেখানে বসে এই হামলার পরিকল্পনা আঁটা হয়েছিল তার পরিচয়ও উদ্ধার করেছে। এএফপি, এপি।
সৌদি পত্রিকা ওকাজ জানায়, ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজন ৬ জন ইসরাঈলিকে গ্রেফতার করে পরে তাদের ছেড়ে দেয়। ওই জঘন্য হামলার সঙ্গে মোসাদ জড়িত এটা দিবালোকের চাইতেও ধ্রুব সত্য।
অথচ এই সেই আমেরিকা যে তার জন্মলগ্ন থেকে ইহুদীদের গোলামী করে কাটালো। মোসাদ সারা জীবন আমেরিকার মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে খেলো।
শুধু মাত্র মোসাদের পারপাস সার্ভ করার জন্য দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ থেকে শুরু করে নতুন শতকের এই সময় পর্যন্ত দুনিয়া জুড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ আন্তর্জাতিক দস্যুবৃত্তি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছে এবং মিত্রদের মদদ জুগিয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরী করলে মোসাদ নিয়ন্ত্রিত আমেরিকাকে বিশ্বের সবচে বড় সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বলতে হয়।
অর্থ, শক্তি ও ক্ষমতার দাপটে মোসাদের প্রমোদবালা আমেরিকা আজ সারা দুনিয়ায় চালু করে রেখেছে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড।
ছোটখাট দ্বিপাক্ষিক বা আঞ্চলিক সংঘাতকে আন্তর্জাতিক যুদ্ধে রূপ দেয়া এবং তাতে জড়িয়ে ফায়দা নেয়ার কাজে মোসাদের প্রমোদবালা আমেরিকার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কয়েকটি নিদর্শন এখানে উল্লেখ করা হলো-
১৯৪৫ সালেঃ
২য় মহাযুদ্ধের শেষভাগে আগষ্ট মাসে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে দুটো পারমানবিক বোমা ফেলে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ হত্যা করে সভ্যতার ইতিহাসে সবচে বড় সন্ত্রাসী ও বর্বরোচিত ঘটনার সূত্রপাত ঘটায় আমেরিকা।
আজ পর্যন্ত জাপানের কাছে এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা দুঃখ পর্যন্ত প্রকাশ করেনি।
১৯৪৮ সাল:
ইসরাঈল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। বিতাড়িত ফিলিস্তিনিদের ফিরে আসার সুযোগ দিতে ইসরাঈলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে যুক্তরাষ্ট্রের অস্বীকৃতি।( গ্রাম্য বাংলার ভাষায় - ভাতার যে!!!!!!)
১৯৪৯ সাল:
সি. আই. এ-এর মদদপুষ্ট সামরিক অভ্যুত্থানে সিরিয়ার নির্বাচিত সরকার উৎখাত।
১৯৫০-৫২ সাল:
কোরিয়ার যুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়াকে অস্ত্রসহ সমর্থন যোগায় আমেরিকা। এই কোরিয়ার যুদ্ধের মাধ্যমেই আমেরিকা বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক যুদ্ধে কোন এক পক্ষের হয়ে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার সূচনা করে যা পরবর্তী দশকগুলোতে অব্যাহত থাকে।
১৯৫৩ সাল:
ব্রিটিশ তেল কোম্পানি জাতীয়করণকারী ইরানের মোসাদ্দেক সরকার উৎখাতে মোসাদের প্রমোদবালা সি. আই. এ-এর সহায়তা। এর ফলে রেজা শাহ্ পাহলভির সিকি শতাব্দীব্যাপী নির্যাতনমূলক শাসন শুরু।
১৯৫৮ সাল:
স্থিতিশীলতা আনার অজুহাতে লেবাননে মার্কিন সৈন্য অবতরণ।
১৯৬০ সাল:
কথিত বিপজ্জনক ব্যক্তি লুকিয়ে আছে, তাকে ধরতে হবে- এই অজুহাতে জোমোনিক রিপাবলিকে মার্কিন সৈন্য সরাসরি হানা দেয়।
১৯৬২ সাল:
কিউবায় রাশিয়া মিসাইল বেস স্থাপনের উদ্যোগ নিলে রণদামামা বাজিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে নেমে যায় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে সিআইএ বহুবার ফিদেল ক্যাষ্ট্রোকে হত্যার চেষ্টা করেছে।
১৯৬৩ সাল:
কমিউনিষ্টদের হত্যার জন্য ইরাকের বাথ পার্টিকে(অচিরেই সাদ্দাম হোসেন দলটির প্রধান হন) একটি তালিকা প্রদান এবং নির্মমভাবে তা বাস্তবায়ন।
১৯৬৫ সাল:
কম্বোডিয়ায় মোসাদের রক্ষিতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বোমা হামলা চালায়।
১৯৬৭ সাল:
নিরাপত্তা পরিষদে ইসরাঈলের প্রতি ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে দখলিকৃত ভূখন্ড ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবে মোসাদের তল্পীবাহক যুক্তরাষ্ট্রের উপর্যুপরি ভেটো প্রদান।
১৯৭০ সাল:
ভিয়েতনাম যুদ্ধের এক পর্যায়ে নাপাম বোমা ফেলে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করে মোসাদের রক্ষিতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
শেষ পর্যন্ত ১৯৭৫ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধে পরাজয় বরণ করে মার্কিন সেনাবাহিনী পশ্চাদপসরণ করে।
১৯৭৩ সাল:
মিসর ও সিরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরাঈল যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সাহায্য পেয়ে পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা পায়।
১৯৭৯ সাল:
আফগান যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে আমেরিকা। রাশিয়াকে আফগানিস্তান থেকে হটানোর জন্য অস্ত্র তুলে দেয় আফগানদের হাতে (আই এস আই এস এর মতো)।
১৯৮০-৮৮ সাল:
ইরান-ইরাক যুদ্ধ। ইরানের ওপর ইরাক আক্রমণ শুরু করলে নিরাপত্তা পরিষদে ইরাকের বিরুদ্ধে নিন্দা জানানোর উদ্যোগের প্রতি মার্কিন ভেটো।
মোসাদীয় প্রেসক্রিপশনে সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র্রের তালিকা থেকে ইরাকের নাম খারিজ, কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন এবং অস্ত্র সরবরাহ।
অন্যদিকে একই সময়ে ইসরাঈল গোপনে ইরানকে অস্ত্র প্রদান করে। মধ্যপ্রাচ্যকে চিরস্থায়ী শ্মশান বানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়।
পারস্য সাগরে অবস্থানকারী মার্কিন জাহাজ থেকে ইরানি যাত্রীবাহী বিমান লক্ষ্য করে গুলি করা হলে ২৯০ যাত্রী নিহত হয়।
১৯৮১-৮৬ সাল:
লিবিয়ার উপকূলে সামরিক মহড়া চালিয়ে গাদ্দাফিকে উসকানি প্রদান। লিবিয়ার বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হলে দুটি লিবীয় বিমান গুলি করে ভূপাতিত।
১৯৮৬ সালে লিবীয় টহল বোটে হামলায় ৭২ জন নিহত। বার্লিনে বোমা হামলার অভিযোগে লিবিয়ায় ব্যাপক বোমাবর্ষণে গাদ্দাফির পালিত কন্যাসহ অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক নিহত।
১৯৮২ সাল:
ভৃত্য যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে লেবাননে ইসরাঈলি অভিযান এবং ১০ হাজার বেসামরিক লোক হত্যা।
১৯৮৯ সাল:
পানামায় মার্কিন সেনাবাহিনী হানা দেয় এবং মাদক চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকার অজুহাতে নরিয়েগাকে অপহরণ করে নিয়ে আসে।
১৯৯১ সাল:
কুয়েতকে দখলমুক্ত করে ইরাককে শায়েস্তা করার জন্য জাতিসংঘের তথাকথিত অনুমোদন নিয়ে উপসাগরীয় যুদ্ধে বহুজাতিক বাহিনীর নেতৃত্ব দেয় আমেরিকা।
বহু ইরাকী সৈন্যকে ট্যাংকের নিচে নির্মমভাবে পিষ্ট করা হয় মোসাদ তথা আমেরিকার নির্দেশে।
১৯৯৮ সাল:
তাঞ্জানিয়া ও কেনিয়ায় মার্কিন দূতাবাসে বোমা হামলার পর ক্ষেপনাস্ত্র ছুড়ে সুদানের ওষুধ কারখানা ধ্বংস করা হয়। দাবি করা হয়েছিল ওই কারখানায় রাসায়নিক অস্ত্র তৈরী করা হয়। কিন্তু পরে যুক্তরাষ্ট্রই সেখানে রাসয়নিক অস্ত্র তৈরীর কোন প্রমাণ না পাওয়ার কথা স্বীকার করে।
তালিকায় আরো যোগ করতে থাকুন দুর্বল আফগানিস্তানকে বোমা মেরে ধ্বংসস্তূপ বানানো, ইরাকের হাজার বছরের মুসলিম সভ্যতা ধ্বংস করা সহ, পাকিস্তানে অনবরত ড্রোন হামলা, লিবিয়াকে তছনছ করা, কথিত আরব বসন্ত ঘটানোর নামে মুসলিম দেশ দখল করা ও অশান্তি সৃষ্টি এবং বর্তমানে সিরিয়ায় চলমান বুক ঝরানো রক্তপাত ইত্যাদি।
’৫০, ’৬০ ও ’৭০-এর দশকে পৃথিবীর বিভিন্ন সদ্য স্বাধীন দেশগুলোয় বিভিন্নভাবে হানা দেয় মোসাদের ব্রেইনচাইল্ড যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন মদদে এসব দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক ও তার সরকারকে উৎখাত করা হয়।
১৯৭৩ সালে চিলিতে আলেন্দকে হত্যা এবং আরো অনেক হত্যাকান্ডের নেপথ্যে মোসাদের নির্দেশে মার্কিন মদদ ছিল স্পষ্ট। আরব বিশ্বে সিরিয়া ও লিবিয়া রুশ মিত্র হওয়ার কারণে এ দেশগুলোর ওপর বিভিন্নভাবে নেমে আসে মার্কিন আক্রোশ। ফিলিস্তিনী স্বাধীনতা সংগ্রামকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করার জন্য ইসরাঈলকে সব রকম মদদ দিয়ে আসছে ভৃত্য আমেরিকা।
ভৃত্য আমেরিকার মদদে ইসরাঈল ১৯৮১ সালে ইরাকের ওসিরাক পারমানবিক স্থাপনা ধ্বংস করে দেয় বিমান হামলা চালিয়ে।
১৯৮৩ সালে তিউনিসিয়ায় পিএলও সদর দপ্তরেও বিমান হামলা চালায় ইসরাঈল। মধ্যপ্রাচ্য সংকট জিইয়ে রাখা এবং ইসরাঈলকে ক্রমাগত শক্তিশালী করার পেছনে রয়েছে মোসাদীয় মার্কিনি মদদ।
বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় হাজার হাজার নিরীহ মুসলমানকে যখন হত্যা করা হয়েছে তখন মার্কিন বিমান মানবতার পক্ষ নিয়ে সার্বিয়দের ঠেকাতে যায়নি। অথচ উপসাগরীয় যুদ্ধের পর থেকে তুচ্ছ অজুহাতে ইরাকের উপর বিমান হামলা আজও অব্যাহত রেখেছে আমেরিকা।
তবে যে কথা প্রনিধানযোগ্য, মোসাদ সঙ্গিনী আমেরিকা এ কথা খুব ভাল করে বুঝেছে যে আগামী শতাব্দীতে অমুসলিম বিশ্বের উপর প্রভূত্ব স্থাপন করা তার জন্য যতটা সহজ তার চেয়ে অনেক অনেক বেশী কঠিন মুসলিম বিশ্বের উপর প্রভূত্ব স্থাপন করা।
এর কারণ খুঁজে পেয়েছে আমেরিকা তার নিজস্ব ভূমিতেই। খোদ আমেরিকাতেই এখন অনেক অপরাধীরা পর্যন্ত মুসলমান হয়ে যাচ্ছে। বড় বড় অপরাধের কারণে তাদেরকে ধরে জেলে ঢোকানো হচ্ছে আর তারা জেলে পবিত্র কুরআন শরীফ পড়ে ইসলামের আদর্শের সন্ধান পেয়ে মুসলমান হয়ে যাচ্ছে।
মোসাদ ও আমেরিকা জানে এভাবেই জাগরণ হচ্ছে মুসলমানের। আর মুসলমানের এ জাগরণের অনিবার্য পরিণতি হচ্ছে অতি নিকট ভবিষ্যতে একটি ইসলামী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা।
আর দুনিয়ার কোন স্থানে ইসলামী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা হলে তা যে গোটা বিশ্বকেই নিয়ন্ত্রণে আনবে মোসাদ অন্তপ্রাণ আমেরিকার তা ভাল করেই জানা।
পাশাপাশি পরজীবি মোসাদ এর বাহক আমেরিকার এও জানা রয়েছে যে পরিপূর্ণ ইসলামী আদর্শের প্রতিফলন তথা বাস্তবায়নসহ একটি ইসলামী সাম্রাজ্য সারা বিশ্বের মুসলমানদের অনেকেরই প্রাণের লালিত স্বপ্ন।
আর সে স্বপ্নকেই দুঃস্বপ্নে পরিণত করার কৌশলটি বাস্তবায়ন করেছে মোসাদ এর পদলেহী সারমেয় আমেরিকা, মোসাদ এজেন্ট সিমন এলিয়ট , তথাগত রায়, মুরগী কবীর, নসরুল হামিদ বিপু, অতিরিক্ত ডিআইজি কৃষ্ণপদ রায়, নব্য ডিআইজি প্রিজন এবং শিপন কুমার বসু-গং কর্তৃক পরিচালিত বাংলাদেশে বিরোধী প্রহসনের মাধ্যমে।
আর মজার ব্যাপার হলো সিরিয়াতে বিদ্রোহী তথা আই এস এর পরামর্শক, অস্ত্র সাপ্লাইয়ার, সমন্বয়ক ছিলো ইসরায়েলী ডিপ্লোমেট তথা মোসাদ এজেন্ট মেন্দী এন সাফাদী । তখন শ্লোগান ছিলো “স্বৈরাচারী বাশার আল আসাদ এর পতন চাই!!!!”
আর আজ শিপন কুমার, রবীন্দ্র ঘোষ,গরুবিন্দ প্রামাণিক, তথা আমার বিশ্বাসঘাতক স্বজাতির সাথেও বৈঠক করছে সেই পুরানো পাপী, অঘটন ঘটন পটিয়সী, মেন্দী এন সাফাদি। তবে এবারের শ্লোগান-“বাংলাদেশে ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় সংখ্যালঘু নির্যাতন চলছে। ইসরায়েল তাদের উদ্ধার করবে, পালন করবে পতিতপাবন এর ভূমিকা!!!!”
আর সুকৃতি মন্ডল আর কথিত হিন্দু ষ্ট্রাগল কমিটির মতো ঘরের শত্রু বিভীষণরা বাংলাদেশে আসার জন্য আহবান জানাচ্ছে বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী অবৈধ ও অবাঞ্চিত ইসরায়েলকে, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়ার মতো তথাকথিত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য।
তারা বহুভোগ্যা খরিদ্দার তালাশী সোনাগাছি, হাড়কাটা, টানবাজারী বারাঙ্গনার মতো মদিরাযুক্ত কন্ঠে ডাকছে,
“এসো নীপবনে ছায়াবিথী তলে
এসো করো স্নান নবধারা জলে
সোনার বাংলাকে প্লাবিত করো মুসলিম রক্ত পানে
মুহুর্মুহু বিষ্ফোরক বর্ষণে শুচি করো এ বাংলায়,
মুসলিম নারীর সম্ভ্রম লুন্ঠনে”
তারপরও টনক নড়ে না বাংলাদেশ সরকারের। পুরো দেশটাকে ভাসিয়ে দিয়েছে তারা প্রদীপের মত, কৃষ্ণপদ রায়দের মত প্রলয় কুমার জোয়ারদার দের মত উগ্র হিন্দু ইসরাইলপন্থী দের দ্বারা!!!
এইতো কয়দিন আগে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার দাস ইসরাইলি এক মন্ত্রীর জয়গান দিয়ে পোস্ট করলেন ফেসবুকে। যেখানে ইসরাইলের অস্তিত্বই স্বীকার করেনা বাংলাদেশ।
বেশ ভালো তো, ভালো না?
সংখ্যালঘু হওয়ার পরেও আজকে দাদাবাবুরা 40% এর বেশী সরকারি চাকরি দখল করে রেখেছে।
টেকনাফ-কক্সবাজার অঞ্চলে প্রদীপ এবং তার দোসররা অগণিত মুসলিম মহিলাকে রেপ করেছে। এর বিচার কোনদিন হবে বলে মনে হয় না।
চিত্তরঞ্জন দাস, এমপি পংকজ যখন চাকুরিপ্রার্থী নারীদের রেপ করে তখন কার কি বিচার হয়েছে?
সত্যিই বিচিত্র এই দেশ!!!!!