ইসলামিক পোস্ট ইসলামিক ছোট বাংলা স্ট্যাটাস | ইসলামিক ফেসবুক পোষ্ট ও ছবি

বাংলা ইসলামিক পোস্ট  | ইসলামিক ছোট বাংলা ফেসবুক পোষ্ট স্ট্যাটাস ছবি ডাউনলোড  ২০২৪

 এখানের ছবি গুলো মূল লেখার সাথে সংযুক্ত না। Randomly এড করে দেওয়া হইছে।
তাই লেখার সাথে ছবি বা ছবির সাথে লেখার মিল খুজবেন না।
পিকচার ক্রেডিট ঃ facebook.com/dailyayah.bd

ইসলাম জিতবেই, তোমাকে সহ অথবা তোমাকে ছাড়া।
কিন্তু তুমি জিততে পারবে না, ইসলামকে ছাড়া।
-আহমেদ দিদাত রহিমাহুল্লাহু।








আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন,
"পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহ
সন্তুষ্ট, আর পিতা-মাতার অসন্তুষ্টিতে
আল্লাহ অসন্তুষ্ট।"
- [তিরমিযী, মিশকাত হা/ ৪৭১০]





যা যা পাবেন এই পোস্টে
  1. ইসলামিক বাংলা স্ট্যাটাস
  2. নির্বাচিত ফেসবুক স্ট্যাটাস
  3. ইসলামিক বাংলা স্টেটাস
  4. ইসলামিক সুন্দর পোস্ট বা সুন্দর ইসলামিক স্ট্যাটাস
  5. ইসলামিক পোস্ট ও ছবি  ২০২৪
  6. ইসলামিক ছোট স্ট্যাটাস 2024
  7. ইসলামিক ফেসবুক পোষ্ট

➤হারাম মাস হারাম মাসের বদলে এবং পবিত্র বিষয়সমূহ কিসাসের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে তোমাদের উপর আক্রমণ করেছে, তোমরা তার উপর আক্রমণ কর, যেরূপ সে তোমাদের উপর আক্রমণ করেছে। আর আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।
|সূরা আল-বাকারাহ, ২ঃ১৯৪|





আর তাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর যে পর্যন্ত না ফিতনা খতম হয়ে যায় এবং দীন আল্লাহর জন্য হয়ে যায়। সুতরাং তারা যদি বিরত হয়, তাহলে যালিমরা ছাড়া (কারো উপর) কোন কঠোরতা নেই।

|সূরা আল-বাকারাহ, ২ঃ১৯৩|





See More : 
Islamic Quotes Picture English

99 Name Of Allah HD Images 

ইসলামিক ফেসবুক পোষ্ট

০১-
 আপনি সালাতের প্রতি উদাসীন। অথচ আপনার মৃত্যু দুই সালাতের মধ্যবর্তী যেকোন সময় হতে পারে।
#Dawah

০২-
“তোমরা কি মনে করো যে, (হিসাব-নিকাশ ছাড়াই) তোমাদেরকে এমনি ছেড়ে দেওয়া হবে?”
-সূরা কিয়ামাহ, আয়াত ৩৬



০৩-
"আর তাদেরকে হত্যা কর যেখানে তাদেরকে পাও এবং তাদেরকে বের করে দাও যেখান থেকে তারা তোমাদেরকে বের করেছিল। আর ফিতনা হত্যার চেয়ে কঠিনতর এবং তোমরা মাসজিদুল হারামের নিকট তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করো না, যতক্ষণ না তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সেখানে লড়াই করে। অতঃপর তারা যদি তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে, তবে তাদেরকে হত্যা কর। এটাই কাফিরদের প্রতিদান।"




০৪-

"তবে যদি তারা বিরত হয়, তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।"
|সূরা আল-বাকারাহ, ২ঃ১৯১-১৯২|





০৫-
আর তোমরা নিজদের মধ্যে তোমাদের সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না এবং তা বিচারকদেরকে (ঘুষ হিসেবে) প্রদান করো না। যাতে মানুষের সম্পদের কোন অংশ পাপের মাধ্যমে জেনে বুঝে খেয়ে ফেলতে পার।
|সূরা আল-বাকারাহ, ২ঃ১৮৮|





০৬-
সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা নিজদের সাথে খিয়ানত করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের তাওবা কবূল করেছেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান কর। আর আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কাল রেখা থেকে স্পষ্ট হয়। অতঃপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। আর তোমরা মাসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না। এটা আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং তোমরা তার নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ মানুষের জন্য স্পষ্ট করেন যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে।
|সূরা আল-বাকারাহ, ২ঃ১৮৭|

০৭-
 আমরা যারা নির্জনে, সুযোগ পেলেই গুনাহে লিপ্ত হই। যারা ইন্টারনেটের অবাধ দুনিয়ায় কোন রকম বাছবিচার না করে বিচরণ করি।

যারা নিজেদের কামনা বাসনার কাছে বন্দী,নফসের কাছে পরাজিত। যারা এক ক্লিকেই অশ্লীলতার জগতে হারিয়ে যাই, তাদের জন্য রীতিমত ভয়ংকর একটা হাদিসঃ
.
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, 'আমার উম্মতের অনেকের কথা আমি জানি, যারা কিয়ামাতের দিন তিহামা অঞ্চলের সাদা পর্বতমালা পরিমাণ নেকি নিয়ে উপস্থিত হবে, কিন্তু আল্লাহ সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করে দেবেন।
.
এই কথা শুনে সাওবান (রা.) বললেন, "হে রাসূলাল্লাহ! তাদের পরিচয় দিন, আমরা যেন নিজেদের অজান্তে তাদের অন্তর্ভুক্ত না হয়ে যাই।"
.
তিনি ﷺ বললেন, তারা তোমাদেরই ভাই, তোমাদের সাথেই থাকে। তোমরা যেমন রাত জেগে ইবাদাত করো, তারাও করে।
.
কিন্তু যখন একাকী হয় তখন আল্লাহর নিষিদ্ধকৃত হারামে লিপ্ত হয়।'' [ইবনে মাজাহ ৪২৪৫; হাদিসটি সহিহ]
#Dawah


০৮- হে আমার রব্ব! আপনি আমাকে মাফ করুন এবং তাওবাহ কবুল করুন; নিশ্চয় আপনিই তওবা কবুলকারী ক্ষমাশীল।

আপনার এবং আপনার পরিবারের ওপর আল্লাহ প্রদত্ত অফুরন্ত নিয়ামত ও রহমতের কথা স্মরণ করুন, না পাওয়ার বেদনা সেই তুলনায় কতটা তুচ্ছ সেটা উপলব্ধি করতে পারবেন ইন-শা~আল্লাহ।

০৯-
 ‘‘গোনাহ করার পর যখন কেউ অনুভব করে—তার অন্তর অন্ধকারে ছেয়ে গেছে, তাহলে ধরে নিবেন, তার অন্তরে এখনো কিছু আলো অবশিষ্ট আছে। আলো আছে বলেই তো সে অন্ধকারের উপস্থিতি টের পেয়েছে।’’
—ইমাম ইবনুল জাওযি রাহিমাহুল্লাহ
[‘‘রাওদ্বাতুল মুহিব্বিন’’ গ্রন্থ হতে চয়িত]
.
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, ‘‘অবশ্যই আল্লাহ তাদের তাওবাহ কবুল করবেন, যারা ভুলবশত মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তাওবাহ করে। এরাই হল সেসব লোক, যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন; আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমনকি যখন মাথার উপর মৃত্যু এসে উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকে—আমি এখন তাওবাহ করছি। আর তাওবাহ নেই তাদের জন্য, যারা কুফুরি অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।’’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত ১৭-১৮)
#Tasbeeh



১০-

আল্লাহ ভাঙা জিনিসগুলোকে অদ্ভুত সুন্দরভাবে ব্যবহার করেন। মেঘ ভেঙে বৃষ্টি ঝরে, মাটিকে বিদীর্ণ করে তাতে হয় ফসল, ফসল ভেঙে তৈরি হয় বীজ, বীজ ভেঙে হয় চারা। সুতরাং, আপনি যখন ভেঙেচুরে যাবেন, প্রশান্তির সাথে আশ্বস্ত হোন এই ভেবে যে—আল্লাহ আপনাকে খুব ভালো কিছুতে পরিণত করার পরিকল্পনা করছেন।
#Dawah



১১-
" মৃত্যু থেকে বাঁচা অসম্ভব ;
কিন্তু, জাহান্নাম থেকে বাঁচা সম্ভব।"
আপনি এবার ভেবে দেখেন কোনটা থেকে বাঁচার চেষ্টা করা উচিত। আর আপনি করছেন কি!
#Dawah





১২-
ইসলামের স্বর্ণযুগে একজন নারী ছিলেন খুবই ইবাদতগুজার। রাতের কিছু অংশ ঘুমিয়ে বাকি সময় ইবাদতে কাটিয়ে দিতেন। তাঁকে বলা হলো, "আরেকটু বেশি ঘুমালেও তো পারেন!"
.
তিনি জবাব দিলেন- "মুমিনের জন্য কবরের দীর্ঘ ঘুমই যথেষ্ট।"
.
[বড়দের তাহাজ্জুদ ও রাত্রিজাগরণ by ইমাম ইবনে আবিদ দুনিয়া রাহ.]
#Dawah

১৩-
কেমন হবে সেই দিন ! কি অনুভূতি হবে সেই মুহূর্তে!
রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন - যখন জান্নাতিরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, আল্লাহ তাআ'লা তাদের বলবেন, তোমরা কি আমার কাছে আরো কিছু চাও?
তখন তারা বলবে,"আপনি কি আমাদের মুখমণ্ডল উজ্জ্বল করে দেননি?

"আপনি কি আমাদের জান্নাতে প্রবেশ করাননি এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেননি?

যদিও জান্নাতে সবাই আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে পরিপূর্ণ থাকবে। কিন্তু তারপরও জান্নাতীরা সেদিন এর চেয়েও বেশি কিছু পাবে। আল্লাহ সেদিন তাদের চোখের উপর থেকে পর্দা তুলে নেবেন আর আল্লাহর বান্দারা সেদিন তাদের রবকে নিজের চোখে দেখতে পাবে। 
(সুবহানাল্লাহ) আল্লাহকে দেখতে পাওয়ার তুলনায় তারা এ পর্যন্ত যা যা পেয়েছে, সবকিছু ভুলে যাবে।
[সহিহ্ মুসলিম: ৪৬৭]

১৪-
প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা সাময়িক। হারাম পথে ; অবৈধ ভাবে বান্দার হক নষ্ট করে করা বিলাসিতা থেকে প্রাপ্ত সুখ সাময়িক। আর এই সাময়িক সুখের পরিণতি চিরস্থায়ী জাহান্নাম।

১৫-
হে মানুষ! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর এবং সেদিনকে ভয় কর, যেদিন পিতা সন্তানের কোন উপকারে আসবে না, সন্তানও তার পিতার কোন উপকারে আসবে না।[1] আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। সুতরাং পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রতারিত না করে এবং শয়তান যেন কিছুতেই আল্লাহ সম্পর্কে তোমাদেরকে ধোঁকায় না ফেলে।
(সূরা-লোকমান-৩৩)
(১) অর্থাৎ সেদিনকে ভয় কর যেদিন কোন পিতাও নিজের পুত্রের উপকার করতে পারবে না। অনুরূপভাবে কোন পুত্ৰও পিতার কোন কল্যাণ করতে পারবে না। বন্ধু, নেতা, পীর এবং এ পর্যায়ের অন্যান্য লোকেরা তবুতো দূর সম্পর্কের।

 দুনিয়ায় সবচেয়ে নিকট সম্পর্ক হচ্ছে সন্তান ও পিতামাতার মধ্যে। কিন্তু সেখানে অবস্থা হবে যদি পুত্ৰ পাকড়াও হয়, তাহলে পিতা এগিয়ে গিয়ে একথা বলবে না যে, তার গোনাহের জন্য আমাকে পাকড়াও করো। 

অন্যদিকে পিতার দুর্ভোগ শুরু হয়ে গেলে পুত্রের একথা বলার হিম্মত হবে না যে, তার বদলে আমাকে জাহান্নামে পাঠিয়ে দাও। এ অবস্থায় নিকট সম্পর্কহীন ভিন্ন ব্যক্তিরা সেখানে পরস্পরের কোন কাজে লাগবে এ আশা করার কি অবকাশই বা থাকে! 
[দেখুন, কুরতুবী, ফাতহুল কাদীর] 

তবে এটা সত্য যে, যদি পিতা-পুত্র উভয়েই ঈমানদার হয় তবে মহান আল্লাহ্‌ তাদের পরস্পরের পর-মর্যাদা উন্নীত করে তাদের একজনকে অপরের কাছাকাছি রাখবেন।

 যেমন, কুরআন কারীমে রয়েছেঃ (وَالَّذِينَ آمَنُوا وَاتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُمْ بِإِيمَانٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ) “যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের সন্তান-সন্ততিও ঈমানের ক্ষেত্রে তাদের অনুসরণ করেছে—আর তারাও মুমিনে পরিণত হয়েছে; আমরা এ সন্তান-সন্ততিদেরকে তাদের পিতা-মাতার মর্যাদায় উন্নীত করে দেব।” 
[সূরা আত-তূর: ২১]

যদিও তাদের কার্যাবলী এ স্তরে পৌছার উপযোগী নয়। সৎ পিতা-মাতার কল্যাণে কেয়ামতের দিন তারা এ ফল লাভ করতে সক্ষম হবে, কিন্তু এক্ষেত্রে শর্ত এই যে, সন্তানকে মুমিন হতে হবে, যদিও কাজকর্মে কোন ত্রুটি ও শৈথিল্য থেকে থাকে। 

অনুরূপভাবে অপর এক আয়াতে রয়েছে, (جَنَّاتُ عَدْنٍ يَدْخُلُونَهَا وَمَنْ صَلَحَ مِنْ آبَائِهِمْ وَأَزْوَاجِهِمْ وَذُرِّيَّاتِهِمْ) “তারা অক্ষয় ও অবিনশ্বর স্বর্গোদ্যানে প্রবেশ করবে এবং এক্ষেত্রে তাদের যোগ্য হিসাবে প্রতিপন্ন পিতা-মাতা, স্ত্রীগণ ও পুত্র-পরিজনও” 
[সূরা আর-রাদ: ২৩] 

তাদের সাথে প্রবেশ করবে যোগ্য বলতে মুমিন হওয়া বোঝানো হয়েছে। এ আয়াতদ্বয় দ্বারা প্ৰমানিত হয় যে, পিতা-মাতা ও সন্তান-সন্তুতি, অনুরূপভাবে স্বামী এবং স্ত্রী মুমিন হওয়ার ক্ষেত্রে যদি সমশ্রেণীভুক্ত হয়, তবে হাশর ময়দানে একের দ্বারা অপরের উপকার সাধিত হবে।


(২) আল্লাহর প্রতিশ্রুতি বলতে কিয়ামতের প্রতিশ্রুতির কথা বুঝানো হয়েছে। [কুরতুবী]


(৩) আয়াতে আল-গারূর বা 'প্ৰতারক' বলতে শয়তান কে বুঝানো হয়েছে। [ইবন কাসীর, সা’দী]


"নিশ্চয় আল্লাহর নিকটেই আছে কিয়ামত (সংঘটিত হওয়ার) জ্ঞান, তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তিনি জানেন জরায়ুতে যা আছে। কেউ জানে না আগামী কাল সে কি অর্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন্ দেশে তার মৃত্যু ঘটবে।[1] নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে অবহিত"
(আয়াত-৩৪)


আমরা হলাম এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীর একজন ছাত্র এবং আমাদের সারা জীবন কর্মের উপর মৃত্যুর পরবর্তী জীবনে এর প্রভাব রয়েছে। এই পৃথিবীটা হল মানবজাতির জন্য পরীক্ষার জায়গা।

"যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন তোমাদেরকে পরীক্ষা করবার জন্য; কে তোমাদের মধ্যে কর্মে সর্বোত্তম?[1] আর তিনি পরাক্রমশালী, বড় ক্ষমাশীল।
- (সূরা মুলক-২)

সূরা হুজুরাতের ১৩নং আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন,
"হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে,পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার।তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাসম্পন্ন, যে অধিক আল্লাহ-ভীরু।আল্লাহ সবকিছু জানেন, সব কিছুর খবর রাখেন।"

আমাদের জীবনের সময় কাউন্ট করা হয় জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত। সুতরাং সময় আমাদের জীবনে খুবই মূল্যবান।

 হাশরের ময়দানে আমাদের জীবনে কাটানো সমস্ত সময় ও সকল কাজেরই হিসাব দিতে হবে।কেবল নামায, রোযা, হজ্জ্ব, যিকির করাই কেবল ইবাদত নয় আমাদের জীবনে কাটানো প্রতিটি দিন যদি মহান আল্লাহর আদেশ-নিষেধ ও নবীর দেখনো পথে চলে তবে তা ইবাদত বলে গণ্য হবে।

আমাদের একটি সাধারণ ধারণা আছে যা মূলত ভুল। আর সেটি হল আল্লাহর রাসূল (সাঃ) ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক এবং এটি ১৪০০ বছর আগে আসছে। কিন্তু ইসলাম হযরত আদম (আ) থেকেই ছিল।

অন্যান্য নবী ও রাসূলদের পাঠানো হতো নির্দিষ্ট জাতির কাছে ও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। কিন্তু ইসলাম এসেছে কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকার জন্য এবং এটি সারা বিশ্বের সকল মানব জাতির জন্য এবং কিয়ামত পর্যন্ত

জীবন-যাপন করার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান ও কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎযোগ্য জীবন-যাপনের যুগোপযোগী একটি নির্ভুল পথনির্দেশনা যা তথাকথিত আধুনিকতার অজুহাত দিয়ে এসকল নির্দেশনা থেকে এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।

আমাদের উচিত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশনা মেনে সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার করা যাতে আমরা দুনিয়া ও বিশেষভাবে আখিরাতে কামিয়াবি হতে পারি।

আমাদের উচিত অন্যের ব্যাপারে তার অগোচরে তার নামে অন্যের নিকট সমালোচনা বা গীবত করার অনুশীলন বন্ধ করা কারণ এটি একটি পাপ এবং ঐ ব্যক্তির নিকট ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত আপনি যতই আল্লাহর কাছে তওবা করেন মহান আল্লাহ এক্ষেত্রে আপনার তওবা কবুল করবেন না।

পাপীরা(মুসলিম/অমুসলিম) শেষ বিচার দিবসে অনেক সাফারার হবে। মহান আল্লাহ এখন ক্ষমাশীল হলেও তখন তিনি পাপী ও অবাধ্য বান্দাদের প্রতি খুবই কঠোর থাকবেন এবং এটি পাপী ও অপরাধীদের জন্য খুবই অনুতপ্তের বিষয় হবে।

 কিন্তু এই অনুতপ্ত তখন কোন কাজে দিবে না কারণ দুনিয়াতে থাকতে তাকে অনেক সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু সে তা কাজে লাগায় নেই এবং নবী-রাসূল ও মুমিন বান্দাদের কটাক্ষ করেছে আর আর নিজের ইচ্ছেমতো জীবন-যাপন করেছে।

এমনটা পাপী মুসলিমদের ক্ষেত্রেও হবে তবে ঈমান নিয়ে মারা গেলে জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করার পর আল্লাহর হুকুমে সে জান্নায়ে যেতে পারবে।

কিন্তু জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করা কি আল্লাহর কোন সৃষ্টির জন্য কি এক মুহূর্ত সম্ভব? দুনিয়ার জীবন তো দুই দিনের। মৃত্যু তো আমাদের জীবনে কোন ঘোষণা ছাড়াই যেকোন সময় চলে আসতে পারে। প্রতিদিন বিশ্বে বিভিন্ন বয়সের মানুষ মারা যাচ্ছে।

 এটা ধারণা করা অনুচিত যা আমি ৮০-৯০ বছর বাচবো। এটা আল্লাহই জানেন। তাই আমাদের উচিত সব সময় আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলার চেষ্টা করা এবং মৃত্যুকে স্মরণ করা।

রাসূল আমাদের প্রতি ওয়াক্তের নামাজেই ভাবতে বলেছেন এটিই হয়তো আমার জীবনের শেষ নামায। এজন্য সব সময় প্রস্তুতি থাকতে হবে। রাসূল (সাঃ) সব সময় আমাদের দুনিয়ার স্বাদ বিনষ্টকারী মৃত্যুর কথা স্মরণ করতে বলেছেন। মৃত্যু কি জিনিস যা যে ব্যক্তি আস্বাদ করে কেবল সেই বুঝে।

মৃত্যুর সময় যেমন মালাকুল মাউত (আ) আমাদের জান কবয করতে আসেন তেমনি শয়তান আসে ওই সময় ঈমান হারা করতে মনে নানা সন্দেহের অনুপ্রবেশ ঘটাতে।

তাই আমাদের উচিত আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলে, নবীর দেখানো পথে চলা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজকে আঁকড়ে ধরা, আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করা ও তাঁর সাহাযা চাওয়া এবং ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করার জন্য দুয়া করা।




১৬-
কেউ যখন দু'আ করার জন্য হাত তোলে, তখন চিরঞ্জীব ও সম্মানিত মহান আল্লাহ তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। তিনি কখনোই আপনাকে শূন্য হাতে ফিরিয়ে দেবেন না। আল্লাহ আপনার দু'আ কবুল করবেন।

তিরমিযীতে বর্ণিত একটি হাদিসে আছে -
"আল্লাহ তোমার দু'আর জবাব দেবেন, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে আল্লাহকে ডাকো। তবে সে সাথে এটাও জেনে রাখো যে, গাফেল অন্তরের দু'আর জবাব দেওয়া হয় না।"
[ তিরমিযীঃ ৩৪৭৯ ]



১৭-
হাদিস কুদসিতে আল্লাহ বলেন, 'বান্দা আমাকে যেমন ভাবে, আমি তেমনই। সে যখন আমাকে স্মরণ করে, আমি তার সাথেই আছি। সে যদি নিজে আমাকে স্মরণ করে, আমি নিজে তাকে স্মরণ করি। আর সে যদি কোন মজলিসে আমাকে স্মরণ করে, তাহলে আমি এর চেয়ে উত্তম মজলিসে তাকে স্মরণ করি। সে আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হলে আমি তার দিকে দুই হাত অগ্রসর হই। সে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হলে আমি তার দিকে দুই হাত অগ্রসর হই। সে আমার দিকে হেঁটে আসলে আমি তার দিকে দৌঁড়ে যাই।
[ বুখারি : ৭৫৩৬ ]


১৮-

জাবির রাদিঅাল্লাহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছি: কোন ব্যক্তি ( আল্লাহ তা'আলার কাছে) কোন কিছু দু'আ করলে আল্লাহ তা'আলা তাকে তা দান করেন কিংবা তার পরিপ্রেক্ষিতে তার হতে কোন অকল্যাণ প্রতিহত করেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সে কোন গুনাহের কাজে লিপ্ত হওয়ার বা আত্নীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার জন্য প্রার্থনা না করে।
[ জামি' আত তিরমিযী: ৩৩৮১]








১৯-
বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত আছে,
তোমাদের কেউ দু'আ করলে তার জবাব ততক্ষণ পর্যন্ত দেওয়া হতে থাকে যতক্ষণ না সে অধৈর্য হয়ে বলে, আমি দু'আ করেছি কিন্তু তা কবুল হলো না।
[ বুখারি: ৬৩৪০, মুসলিম : ৭১১০]

বি:দ্রঃ কখনো এমনটা বলবেন না যে, আমি এতো দু'আ করলাম অথচ আল্লাহ কবুল করলেন না। এভাবে করলে আপনি নিজেই নিজের দু'আকে ধ্বংস করে ফেলবেন। সালফদের মাঝে কেউ ২০ বছর ধরে একটা জিনিস চেয়ে তা পাননি, তারপরও তারা আশা ছাড়েননি, এরপরও তাঁরা দু'আ করে গেছেন আল্লাহ কবুল করবেন এই আশায়।

২০-
"আল্লাহ্ আমাদের পরকালের সুখের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দুনিয়াতে সুখের সন্ধানে অস্থির,পেরেশান হওয়া আর ফসল পাকার পূর্বেই কেটে ঘরে তোলা একই কথা। অথচ কতইনা উত্তম হতো সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করা। তেমনি পরকালের সুখ হচ্ছে আসল সুখ এবং আমাদের উচিত আসল সুখের জন্যই কাজ করা এবং এর পর এর জন্য অপেক্ষা ।"
-ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ
[আল ফাওয়াঈদ]
#Dawah


২১-
আমরা অনেকেই আল্লাহর দরবারে হাত তুলে দু'আ করি,প্রানপণে চোখে পানি আনতে চেষ্টা করি কিন্তু আমাদের চোখে পানি আসে না। এটা সত্যিই দুঃখজনক ব্যাপার। আল্লাহর কাছে হাত দুটো উঠানোর পরপরই আমাদের কান্না আসার কথা; অন্তত দুটি কারণে। ১) আমাদের গোনাহের আধিক্য.২)গোনাহ করতে থাকার পরও তাঁর অগণিত নেয়ামতপ্রাপ্তি।
.
আমরা আজকে সালাফদের এবং ক্ল্যাসিকাল আলেমদের শিখিয়ে দেওয়া কিছু হার্ট টাচি (হৃদয়গ্রাহী) কথা শেয়ার করব ইনশাআল্লাহ, যেগুলো বলে দু'আ করলে আল্লাহ চাহেতো চোখে পানি আসবে।
.
আসলে দু'আর ব্যাপারটি একান্তই নিজের। আপনি আসলে দু'আ করছেন কার কাছে? আপনার মালিকের কাছে। তিনি এমন মালিক, যিনি সবচেয়ে বড় ক্ষমাশীল, সবচেয়ে বড় দানশীল ও সবচেয়ে বড় ক্ষমতাবান। সুতরাং আপনি এমনভাবে দু'আ করবেন যেন আপনি তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন আর তিনি আপনার দিকে তাকিয়ে আছেন। 

এবার আপনি জাস্ট কল্পনা করুন নিজেকে একজন ভিক্ষুক হিসেবে, যে প্রায় মৃত্যুসহ্যায়; একটু খাবার না পেলে এক্ষণি মারা যাবে। অর্থাৎ এমন এক গোনাহগার যে জাহান্নামে যাওয়ার যোগ্য, এমতাবস্থায় আপনি জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য তাঁর কাছে ভিক্ষুকের মত চাইতে থাকুন।
.
ভিক্ষুকের সাথে আপনার মৌলিক একটি পার্থক্য খেয়াল রাখুন। ভিক্ষুক যদি একজনের কাছে গিয়ে কিছু না-ও পায় অন্যজনের কাছে যেতে পারে। কিন্তু আপনি আল্লাহর দরবার থেকে শূন্য হাতে ফেরত আসলে দ্বিতীয় কোন অপশন নেই! এই ব্যাপারটা দু'আর মধ্যে আল্লাহকে বলুন এভাবে...
.
"হে আল্লাহ! ভিক্ষুককে খেদিয়ে দিলে সে আরেকজনের কাছে যেতে পারে, কিন্তু তুমি যদি আমাকে তোমার রহমতের দরবার থেকে তাড়িয়ে দাও আমি কোথায় যাব? জাহান্নাম ছাড়া তো আমার কোন উপায় নেই।


 হে আল্লাহ! যদিও আমি তোমার নৈকট্যশীল বান্দাদের মতো হতে পারিনি, কিন্তু আমি তো তোমারই গোলাম, আমার রব তো তুমিই। তোমার এই দুর্বল বান্দাকে কে রক্ষা করবে তুমি ছাড়া? হে আল্লাহ! আমার জীবনটাকে তুমি তোমার মত চালাও, আমাকে আমাকে আমার উপর সোপর্দ করো না, তাহলে আমি ধ্বংস হয়ে যাব।"





আরো কিছু হার্ট টাচি কথা, যেগুলো দু'আর মধ্যে বলতে পারেন; ইনশাআল্লাহ মনটা নরম হবে, চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরবে।
.
"হে আমার মালিক! তুমি যদি আমাকে জাহান্নামে পাঠাও তবে আমার কোন অধিকার নেই এ ব্যাপারে অসন্তুষ্ট হওয়ার; কারণ আমি যেসব গোনাহ করেছি তার জন্য জাহান্নামই প্রাপ্য।

কিন্তু হে মালিক! আমি তো তোমারই একজন দুর্বল বান্দা, যে তোমাকে ভালোবাসে, তোমার রাসূলকে ভালোবাসে, তোমার সাথে তো আমি শিরক করি না। তুমিই তো বলেছো, শিরকের গোনাহ ছাড়া যেকোন গোনাহ তুমি ক্ষমা করে দিতে পারো মন চাইলেই।

হে আমার রব! আমি তোমার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাই। তোমার প্রতি ভালো ধারণা ব্যতীত আমার কোন সম্বল নেই। তুমি ছাড়া আমার কোন সহায় নেই। আমাকে মাফ করে দাও।"
.


"হে আমার রব! আমার আল্লাহ! আমার মালিক! তুমি যদি আমাকে জাহান্নামে পাঠাও সেটা হবে তোমার ন্যায়বিচার (কারণ আমি এটারই যোগ্য), আর যদি আমাকে ক্ষমা করে দাও তবে সেটা হবে তোমার একান্ত অনুগ্রহ। ও আমার মালিক! আমি তোমার কাছে অনুগ্রহ (ইহসান) চাই, ন্যায়বিচার চাই না।"
.
"হে আল্লাহ! আমি যদিও জান্নাতে যাওয়ার যোগ্যতা রাখি না, আমি তো জাহান্নামের আগুন সহ্য করারও ক্ষমতা রাখি না! কীভাবে থাকব সেখানে? হে আল্লাহ আমার মত পাপিষ্ঠকে ক্ষমা করলে তোমার কোন জবাবদিহি করতে হবে না।

হে মালিক! দোমার দয়ার ভাণ্ডার তো বিশাল! একটু আমার দিকে রহমতের দৃষ্টি দাও।"
এভাবে মনের মাধুরি মিশিয়ে আল্লাহর কাছে চাইলে অশ্রুপাত হবে ইনশাআল্লাহ।

২২-
আপনি যত বেশি আল্লাহর অনুগ্রহ, মহত্ত্বের ব্যাপারে জানবেন, যত বেশি অনুধাবন করবেন -
আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ইচ্ছা তত বেশি আপনার মধ্যে প্রবল হবে।
#Dawah


২৩-
যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে তাদের সময় কি আসেনি যে, আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে তাতে তাদের হৃদয় ভক্তি-বিগলিত হবে?এবং পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল তাদের মত তারা হবে না?বহুকাল অতিক্রান্ত হয়ে গেলে যাদের অন্তর কঠিন হয়ে পড়েছিল।আর তাদের অধিকাংশই সত্যত্যাগী।
(সূরা হাদিস-১৬) [খুব সম্ভবত সূরা হাদিদ কে ভুলে হাদিস লিখছে লেখক]




আজ দেখা যাচ্ছে অধিকাংশ মুসলিম মহান আল্লাহকে ভুলে নিজের ইচ্ছেমতো জীবন-যাপন করছে। 

নিয়মিত নামাজ না পড়া, সুদ-ঘুষ, যিনা-ব্যভিচার-পরকীয়া-ফ্রিমিক্সিং,পর্ণগ্রাফি, হত্যা, ধর্ষণ, গুম, খুন, ওজনে কম দেয়া, খাদ্যে ভেজাল দেয়া, অবৈধ মজুদদারি, নারীদের বেপর্দা চলাচল, শরিয়াত সম্মত পর্দা না করা, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের কেস, 

জনগণের ঘাড়ে ট্যাক্সের বোঝা চাপিয়ে দেয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে বেহায়াপনা, নাচ-গান, সৎ কাজের আদেশ না দেয়া ও অসৎ কাজের নিষেধ না করাইত্যাদি অপরাধ মানুষ কর্তৃক সংঘটিত হচ্ছে যা ইসলাম সম্মত নয় 

এবং আল্লাহর দেয়া জীবন বিধানের পরিপন্থী। কেবলমাত্র নামাজ, যাকাত, হজ্জ্ব, জিকির করাই ইবাদত নয়, মহান আল্লাহর আদেশ মেনে চলা ও নিষেধ গুলো থেকে বিরত থাকাও ইবাদত।

আপনি গান শুনবেন অথচ এটি আপনাকে আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে রাখবে। তাছাড়া গান মানুষের অন্তরে মুনাফেকি সৃষ্টি করে। আমরা জানি না আমরা কে কখন কিভাবে মৃত্যুবরণ করব। কেউ যদি গান শুনতে শুনতে মৃত্যুবরণ করে তবে সে, সে অবস্থায়ই পুনরুত্থিত হবে। তাহলে সে আল্লাহর অবাধ্য অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে এবং পুনরুত্থানও এভাবে হবে তাহলে তার কি অবস্থা হবে একবার চিন্তা করুন। 


আপনি কি চাবেন আপনার মৃত্যু আল্লাহর অবাধ্য অবস্থায় হোক? যার যার কর্ম তার তার সাথেই যাবে এবং সে পরকালে তার কর্মফল ভোগ করবে। মনে রাখবেন এই দুইদিনের দুনিয়ায়টা হলো আমাদের মানবজাতির জন্য পরীক্ষার জায়গা।




 মৃত্যুর পর আপনার কোন প্রটেকশন নেই একমাত্র আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা ছাড়া। দুনিয়াতে আপনার পাওয়ার থাকতে পারে, অনেক সিকিউরিটি থাকতে পারে কিন্তু আখিরাতে আপনাকে সিকিউরিটি দিবে কে? 
আমরা যারা মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করেনি তারা কি বলতে পারি মৃত্যু যন্ত্রণা কেমন? আমরা কি বলতে পারি আজকে যে মারা গেছে কবরে তার সাথে কি হচ্ছে? আমরা চিন্তা করি আমাদের মৃত্যুর আমাদের সাথে কি আচরণ করা হবে?
 হাশরের ময়দানে আমাদের অবস্থা কেমন হবে? আমরা কি ভাবি কেন আল্লাহ আমাদের এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় অল্প দিনের জন্য পাঠিয়েছে? কোন উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছেন? কেন জীবন যাপনের গাইড-লাইন দিয়েছেন? কেনই বা মানুষের জীবন-যাপনের উপর কর্মফলের বিধান দিয়েছেন(দুনিয়াতে ও আখিরাতে)?

হে আদমের সন্তানগণ! শয়তান যেন তোমাদেরকে কিছুতেই ফিতনায় জড়িত না করে; যেভাবে সে তোমাদের পিতা-মাতাকে (ফিতনায় জড়িত করে) বেহেশ্ত হতে বহিষ্কৃত করেছিল, তাদের লজ্জাস্থান তাদেরকে দেখাবার জন্য বিবস্ত্র করে ফেলেছিল। নিশ্চয় সে নিজে এবং তার দলবল তোমাদেরকে এমন স্থান হতে দেখে থাকে যে, তোমরা তাদেরকে দেখতে পাও না।[1] যারা বিশ্বাস করে না, শয়তানকে আমি তাদের অভিভাবক (বন্ধু) করেছি।
(সূরা আরাফ-২৭)


যারা শুধু পার্থিব জীবন ও তার সৌন্দর্য কামনা করে, আমি তাদেরকে তাদের কৃতকর্মসমূহ (এর ফল) পৃথিবীতেই পরিপূর্ণরূপে প্রদান করে দিই এবং সেখানে তাদের জন্য কিছুই কম করা হয় না।(সূরা হুদ-১৫)

এরা এমন লোক যে, তাদের জন্য পরকালে জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই নেই, আর তারা যা কিছু করেছে, তা সবই পরকালে নিষ্ফল হবে এবং যা কিছু করে থাকে, তাও নিরর্থক হবে। (সূরা হুদ-১৬)




হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তাহলে তিনি তোমাদেরকে ন্যায়-অন্যায় পার্থক্যকারী শক্তি দেবেন, তোমাদের পাপ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ অতিশয় অনুগ্রহশীল।(সূরা আনফাল-২৯)।

অথচ আমরা আল্লাহর থেকে করোনা ভাইরাসকে বেশি ভয় পাচ্ছি।আল্লাহর আদেশ-নিষেধকে অমান্য করি অথচ আল্লাহর দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন হবে।

আর সূরা আরাফের ৩ নং আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, "তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে, তোমরা তার অনুসরণ কর[1] এবং তাঁকে ছাড়া অন্যদেরকে অভিভাবকরূপে অনুসরণ করো না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ করে থাক।"

তাই আমাদের উচিত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশিত পথে জীবন-যাপন করা


সুন্দর ইসলামিক স্ট্যাটাস




২৪-
‘‘সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো তিনটি: অল্প সম্পদ থেকে দান করা, নির্জনে পরহেজগারির উপর থাকা এবং যার থেকে মানুষ কিছু আশা করে এবং ক্ষতির ভয় করে, তার সামনে সত্য বলা।’’
—ইমাম শাফি'ঈ (রাহিমাহুল্লাহ)
(সিফাতুস সাফওয়া: ২/১৪৯)


২৫-
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা প্রশংসা করে বলেন, ‘‘তারা সৎকর্মে ঝাঁপিয়ে পড়ত, তারা আশা ও ভীতি (জান্নাতের আশা ও জাহান্নামের ভীতি) সহকারে আমাকে ডাকত এবং তারা ছিল আমার কাছে বিনীত।’’ 
(সূরা আম্বিয়া: ৯০)

.
২৬-

আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, ‘‘আমার বান্দা যতক্ষণ আমার যিকর করে এবং আমার জন্য তার দু'ঠোঁট নাড়াচাড়া করে ততক্ষণ আমি তার সাথে থাকি।’’ [মুসনাদে আহমাদ: ২/৫৪০, ইবনু মাজাহ: ২/১২৪৬; হাদিসে কুদসি]


ইসলামিক ফেসবুক পোস্ট


২৭-
চোখের সামনে বিপর্যয় দেখেও আমরা অনেকে তাওবাহ করছি না, তাওবাহ করতে পারছি না। সুবহানাল্লাহ! এটা এক বিরাট নিদর্শন! অনেকেই ভাবছি, ‘‘পরিস্থিতি এত খারাপ হয়নি, শীঘ্রই ভালো হহয়ে যাব’’। সত্যি বলতে এই ‘শীঘ্রই’-টা অনেকের আসে না, শুধু পরিকল্পনাতেই থেকে যায়। যারা আজ কবরের অধিবাসী, তাদেরও অনেকেই জীবদ্দশায় আকাঙ্ক্ষা করতো, ‘‘শীঘ্রই ভালো হয়ে যাব, তাওবাহ্ করব’’ কিন্তু তাদের সেই আশা পূরণ হয়নি।
.
অসংখ্য মানুষ মৃত্যুর সময় বেঈমান হয়ে দুনিয়া ত্যাগ করে। দুর্বল ঈমানের মানুষেরা, বিশেষত যারা ইবাদত থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকে, গুনাহকে থোড়াই কেয়ার করে, তাদের এই আশঙ্কা বেশি। ইমাম যাহাবি তাঁর সিয়ারু আলামিন নুবালাতে এমন অনেক ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন।
.
নবীজিকে কবরের আযাব দেখানো হয়েছিলো, ফলে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি কখনো কবরের চেয়ে ভয়াবহ দৃশ্য দেখিনি।’’[১]
.
‘‘যদি তোমরা ভয়ে কবর দেওয়া পরিত্যাগ না করতে, তাহলে আমি আল্লাহর নিকট দু'আ করতাম, যেন তোমাদেরকে কবরের আযাব শুনানো হয়, যা আমি শুনতে পাই।’’[২]
.
হাদিসে এসেছে, মুমিন ব্যক্তিকে কবরে জান্নাতের পোষাক পরিয়ে দেওয়া হবে, তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দেওয়া হবে, ফলে সে এগুলো উপভোগ করতে থাকবে।[৩]
.
এগুলো দেখার পর সে বলবে, ‘‘হে আল্লাহ! দ্রুত কেয়ামত সংঘটিত করো, যাতে আমি আমার পরিবার এবং সম্পদের দিকে ফিরে যেতে পারি।’’[৪]
.
আর কাফেরের জন্য কবরকে সংকীর্ণ করে দেওয়া হবে এবং সে তার জাহান্নামের স্থানটি দেখতে পাবে। ফলে ভয়ে আল্লাহ্কে বলবে, ‘‘হে প্রতিপালক! কিয়ামত সংঘটিত করবেন না।’’[৫]
.
এজন্য রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরের আযাব এবং ফিতনা থেকে বারবার পানাহ চাইতেন। আমরা এভাবে দু'আ করতে পারি-


اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُبِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ
আল্লাহুম্মা ইন্নি আ'উযুবিকা মিন 'আযাবিল ক্বাবরি
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট কবরের আযাব থেকে পানাহ চাই।[৬]
.
এটি সিজদায় বেশি বেশি বলা যেতে পারে। হাদিসে এসেছে, ‘‘বান্দা সিজদা অবস্থায় প্রভুর সর্বাধিক নিকটবর্তী হয়। সুতরাং তোমরা তখন বেশি বেশি দু'আ করো।’’ [সহিহ মুসলিম]


[১] তিরমিযি: ৪২৬৭, সহিহ তারগিব: ৩৫৫০, সহিহ আল জামি': ৫৬২৩
[২] সহিহ মুসলিম: ২৮৬৮
[৩] আহমাদ: ৪/২৮৭-২৮৮, আবু দাউদ: ৪৭৫৩
[৪] আহমাদ: ১৮৫৫৭, সহিহ আল জামি': ১৬৭৬
[৫] আহমাদ: ১৮৬৩৭, সহিহ আল জামি': ১৬৭৬
[৬] সহিহ বুখারি: ১৩৭৭, ইবনু মাজাহ: ৯০৯, ইরওয়া: ৩৫০
.
#Tasbeeh




ইসলামিক ছোট স্ট্যাটাস




২৮-
বিসিএস ক্যাডারদের দেখে ঈর্ষা না করে ঐ ব্যক্তিকে দেখে আমাদের ঈর্ষা করা উচিত, যে খুব সহজেই আল্লাহর ভয়ে অশ্রু বিসর্জন দিতে পারে, দু'আর মধ্যে শিশুর মত ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে পারে, বিনয়াবনত হয়ে সাজদায় লুটিয়ে পড়ে। সত্যিকারার্থেই ওঁরা ভাগ্যবান। জাহান্নামের আগুনকে নিভাতে পারে একটি জিনিসই__ দু'ফোঁটা চোখের পানি। এটি বিরাট বড় নিয়ামত। যারা এই নিয়ামতে ধন্য হয়েছেন তাদের উচিত এর যথাযথ কদর করা। আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর ভয়ে চক্ষু থেকে অশ্রু ফেলানোর তাওফিক দিক।

২৯-
যখন আল্লাহর কাছে মন থেকে কিছু চাইবেন
,দুয়া করবেন তখন অলৌকিক (miracle) এ বিশ্বাস রাখুন।পরিবেশ,পরিস্থিতি, আর সময়ের কারনে আপনি হয়তো ধরে নিয়েছেন আল্লাহর কাছে যা চেয়েছেন তা কখনো পাওয়া আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। 


কিন্তু আপনি ভুলে গেছেন আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা পরিবেশ, পরিস্থিতি আর সময়ের মুখাপেক্ষী নন। বরং আসমান -জমিনে যা কিছু আছে সব কিছুই আল্লাহর মুখাপেক্ষী।

তাছাড়া দুয়া করার সময় এই বিশ্বাস রাখবেন, আপনার দু'আ অবশ্যই কবুল হবে। আল্লাহ নিশ্চয়ই আপনার ডাকে সাড়া দিবেন।
কারণ সহীহ হাদিস এসেছে,"অন্যমনস্ক, অমনোযোগী এবং গাফেল অন্তরের দুয়া আল্লাহ্ কবুল করেন না।"

#Dawah






৩০-
চারটি স্বভাব যার মধ্যে রয়েছে, সে নিখাদ মুনাফিক। আর উল্লেখিত চারটি থেকে যার মধ্যে একটিও পাওয়া যাবে, সে তা ছেড়ে না দেওয়া পর্যন্ত একটি মুনাফেকি স্বভাব নিয়ে থাকবে -
(১) আমানত রাখা হলে সে খিয়ানত করে ;
(২) কথা বলার সময় মিথ্যা বলে;
(৩) অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে ;
(৪) বিতর্কে লিপ্ত হলে গালি দেয়।
[ বুখারী : ৩৪; মুসলিম : ৫৮ ]


৩১-
দুটো নিয়ামত সম্পর্কে অনেক মানুষ ধোঁকায় থাকে। সেগুলো হলো: সুস্থতা ও অবসর। ~ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ [সহিহ বুখারি: ৬৪১২]





ইসলামিক পোস্ট বাংলা




৩২-
ফ্রান্স প্রথম ইউরোপীয় দেশ যারা মুসলিম নারীদের জন্য মুখ ঢাকা নিষিদ্ধ করেছিল, মুখ ঢাকলে গ্রেফতার করত। কিন্তু এখন তারা গোটা দেশের নাগরিকদের জন্য মুখ ঢাকা বাধ্যতামূলক করেছে এবং মুখ না ঢাকলে 150 ইউরো জরিমানা হবে।
গজব হল সমস্ত চুলকানির ওষুধ।

৩৩-

সম্ভব হলে এখনি দু'আয় লেগে যান। হাদিসে এসেছে, জুমুআর দিনে সূর্যাস্তের পূর্বে নিশ্চিতভাবে দু'আ কবুল হয়। দু'আর প্রথমে অবশ্যই আল্লাহর প্রশংসা করুন (হোক সেটা সূরা ফাতিহার প্রথম আয়াত বা আয়াতুল কুরসির প্রথম বাক্যটি দিয়ে) এরপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরুদ পড়ুন (উত্তম হবে, আমরা নামাযের শেষ বৈঠকে যে দরুদ পড়ি, সেটা পড়লে), অতপর মূল দু'আগুলো শুরু করুন। করোনা ভাইরাসের ফিতনা থেকে আল্লাহ্ যেন মুসলিম উম্মাহকে হেফাজত করেন, মুসলমানদের এই পরীক্ষায় সবর করার তাওফিক দেন।
.
চলমান এই ক্রাইসিসে ডাক্তারি পরামর্শগুলো ভালোভাবে অনুসরণ করার পাশাপাশি আল্লাহর উপর পূর্ণ তাওয়াক্কুল করুন। ভাইরাসের এত ধ্বংসাত্মক শক্তিমত্তা আল্লাহই দিয়েছেন। তিনিই সেটিকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারেন। ভাইরাসটির নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নেই। অন্যকে সংক্রমণ করারও তার কোনো যোগ্যতা নেই, বরং আল্লাহই তাকে সংক্রমণের উপযুক্ত করেছেন, তাই মানুষ সংক্রমতিত হচ্ছে। এভাবে নিজের ঈমান-আকিদাকে হেফাজত করুন।
.
#Tasbeeh



৩৪-
একদিন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের সামনে বললেন, ‘‘নিঃসঙ্গ একাকী মানুষেরা এগিয়ে গেলো।’’ সাহাবাগণ প্রশ্ন করলেন, ‘‘হে আল্লাহর রাসূল! মুফাররাদ বা একাকী মানুষ কারা?’’ তিনি বলেন, ‘‘আল্লাহর বেশি বেশি যিকরকারীগণ।’’ [সহিহ মুসলিম: ৪/২০৬২]



ইসলামিক সুন্দর পোস্ট



৩৫-
‘‘নিকাব পরলে দম বন্ধ হয়ে আসে’’ দু’দিন আগেও যে বোনেরা এসব বলতেন, আজ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় তাঁরাও মুখ ঢেকে চলাফেরা করছেন। এখন কিন্তু সম্ভব হচ্ছে। আল্লাহ্ তা’আলা সকল মুসলিম বোনকে নিকাবি এবং পর্দানশীন হিসেবে কবুল করুন।
.

‘‘ঘুমালে সহজে ওঠতে পারি না’’ এই অজুহাতে যারা বছরের পর বছর ফজরের নামাযে অলসতা ও উদাসীনতা দেখান, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য তাদেরকেই ভোরে ওঠে হাঁটতে হয়। তখন সম্ভব হয়।
.
ভুল বোঝবেন না। আমরা কাউকে তাচ্ছিল্য করছি না। মুমিন ভাই-বোনকে নিয়ে তাচ্ছিল্য করা জায়েয নেই।
.
তবে, মূলকথা হলো, আমরা অজুহাত দিয়ে নিজেদের মনকে মিথ্যে সান্ত্বনা দেই। ‘‘দ্বীন-ইসলাম’’ আমাদের প্রায়োরিটি লিস্টে থাকে না, তাই আমরা অজুহাত খুঁজি। ঈমাদের দুর্বলতাই এর মূল কারণ। আল্লাহ্ তা‘আলা আমাদের ঈমানে মজবুতি দান করুন। আমিন।
.
জীবনের বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে আমাদেরকে বাধ্য হয়ে আল্লাহর দিকে ফিরতে হয়। তারা কতই-না সৌভাগ্যবান ও উচ্চ মর্যাদার অধিকারী, যারা স্বেচ্ছায় আল্লাহর কাছে নিজেকে সঁপে দেয়!
.
#Tasbeeh


৩৬-
গোপন গোনাহের পরিণতি ভয়াবহ। এ ব্যাপারে সাবধান থাকা জরুরি। উপরে দ্বীনদারি দেখিয়ে গোপন গোনাহের কারণে অনেক মানুষকে বেঈমান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। তাই, আমাদের পূর্বসূরিগণ এ ব্যাপারে বারবার সতর্ক করে গেছেন।
.
শায়খ আবদুল আযিয আত-ত্বারিফি (হাফিযাহুল্লাহ্) বলেন, ‘‘হিদায়াত পাওয়ার পর যত মানুষ পুনরায় জাহিলিয়াতের জীবনে ফিরে গিয়েছে, তাদের অধিকাংশই এমন কাজের দিকে ঝুঁকে গিয়েছিলো, যা তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে করতো। তাই গোপনে আপনার দ্বীনদারি বজায় রাখুন এবং আল্লাহ সাথে সৎ থাকুন; তিনি আপনার বাহ্যিক দ্বীনদারি রক্ষা করবেন।’’
.
আর সেই ভীতিকর হাদিসের কথা তো আমরা জানিই, যেখানে বলা হয়েছে—

কিছু লোকের আমল তিহামার পাহাড় পরিমাণ হবে। সেগুলোকে আল্লাহ্ বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করে দেবেন। কারণ তারা অন্যান্য ইবাদতও করত আবার যখন সুযোগ আসতো, গোপনে কবিরা গোনাহে লিপ্ত হতো। (হাদিসটি সহিহ)
.
আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে বলেন-
يعلم خائنة الأعين وما تخفي الصدور
‘‘তিনি দৃষ্টিসমূহের খিয়ানত (চোরা চাহনি) এবং বক্ষস্থিত লুক্বায়িত বিষয়েও অবগত।’’
.
একটি ঘটনা এমন পাওয়া যায় যে, মক্কার বা মদিনার একজন মুয়াযযিনের মৃত্যু হয়েছিলো এমন অবস্থায় যে, সে কুরআনুল কারীমকে অস্বীকার করছিলো! নাউযুবিল্লাহ্। পরবর্তিতে জানা গেছে, সে কুদৃষ্টি থেকে নিজেকে হেফাযত করতো না। তার দৃষ্টির লাগাম সে ছেড়ে দিয়েছিলো।
.
সুতরাং গোপনে দৃষ্টি, শ্রবণ এবং মুখের গোনাহের ব্যাপারে সাবধান থাকা জরুরি। আল্লাহ্ কুরআনে বলেন-
ما يلفظ من قول إلا لديه رقيب عتيد
‘‘সে (মানুষ) মুখ দিয়ে যে কথাই উচ্চারণ করে, তা লিপিবদ্ধ করার জন্য সদা প্রস্তুত প্রহরী বিদ্যমান রয়েছে।’’
.
সুতরাং গিবতের আড্ডা, গান শোনায় মত্ত হওয়া, মুভি দেখা, হারাম দৃষ্টিপাত— সবকিছুর ব্যাপারে আমাদের পূর্ণ সতর্ক থাকা জরুরি।
.
আল্লাহ্ কুরআনে বলেন—
ألم يعلم بأن الله يرى
‘‘সে কি জানে না যে, আল্লাহ তাকে দেখছেন?’’

.
আমাদের অন্তরে কাঁপন ধরিয়ে দেওয়ার জন্য এই একটি আয়াতই যথেষ্ট।
.
#Tasbeeh




৩১-
‘‘আল্লাহ যখন কাউকে ভালোবাসেন, তখন তাকে দুনিয়া (দুনিয়ার মোহে থাকা) থেকে সেভাবে দূরে রাখেন, যেভাবে তোমরা অসুস্থ ব্যক্তিকে পানি হতে দূরে রাখ।’’ [সহিহ ইবনে হিব্বান: ২/৪৪৪, মুসনাদে আহমাদ: ৪/২১০]
.
ফুযাইল বিন ইয়ায (রাহ.) বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যের আলামত পাঁচটি। যথা:
১. অন্তর কঠিন ও শক্ত হওয়া;
২. চোখ অশ্রুসজল না হওয়া;
৩. লজ্জা-শরম কম হওয়া;
৪. দুনিয়ার প্রতি মুহাব্বাত এবং
৫. দীর্ঘ আশা-আকাঙ্ক্ষা।
.
এর বিপরীতে পাঁচটি বিষয় সৌভাগ্যের আলামত। যথা:
১. অন্তরের দৃঢ়তা;
২. তাকওয়া;
৩. দুনিয়ার প্রতি অনিহা;
৪. স্বাভাবিক লজ্জা-শরম থাকা এবং
৫. ইলম (দ্বীনি জ্ঞান) অর্জন করা।’’
.
#Tasbeeh




৩২-


হঠাৎ মৃত্যু কি খারাপ?

.
আয়েশা (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আকস্মিক মৃত্যু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, ‘‘তা মুমিনের জন্য স্বস্তি আর পাপাচারীর জন্য আফসোসের ছোবল।’’ [মুসনাদে আহমাদ: ২৫০৪২]
.
কারণ মুমিন সর্বদা ঈমানি তাকাযা পূরণ করে, আমলের মধ্যেই থাকে। ফলে সে সর্বদা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকে। পক্ষান্তরে পাপাচারী মিথ্যা আশায় থাকে যে, ‘উপযুক্ত সময়’ (!) আসলে তাওবাহ্ করবে, আমলে লেগে যাবে। কিন্তু আকস্মিক মৃত্যু এসে তার এই মিথ্যা আশা পণ্ড করে দেয়।
.
আল্লাহ্ আমাদের গোনাহ্ থেকে বেঁচে আমলে লেগে থাকার তাওফিক দিন। আমিন।
.
করোনা ভাইরাস নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকা স্বাভাবিক, তবে একজন ঈমানদারের উচিত নয়, সে আতঙ্কিত হয়ে পড়বে। কারণ আল্লাহর নির্ধারিত তাকদির থেকে আমরা কেউ সরতে পারবো না। একজন প্রকৃত মুমিন এমনভাবে জীবনযাপন করে যে, যখনই মৃত্যুর ফেরেশতা আসুক, সে প্রস্তুত থাকবে। সুতরাং সে আতঙ্কিত থাকবে না। এদিক থেকে আতঙ্ক থাকতে পারে যে, ‘‘আল্লাহর সামনে কীভাবে দাঁড়াব?’’
.
হাম্মাদ ইবনু সালামাহ রাহিমাহুল্লাহর ব্যাপারে বলা হতো, তাঁকে যদি বলা হয়— আজই আপনার মৃত্যু হবে, তবে তিনি তাঁর সাধারণ আমলের মধ্যে কোনো কিছু বৃদ্ধি করতে পারবেন না।

কারণ কী? কারণ তিনি সারাক্ষণ এমনভাবে ইবাদতে লেগে থাকতেন যে, তাতে সংযোজনের সুযোগই নেই!
.
আপনি বলুন, এমন লোকদের জন্য মৃত্যু কি রহমত নয়? কারণ মৃত্যু মানেই তো তার জন্য দুনিয়ার ঝামেলা, দুশ্চিন্তা ও দুঃখবোধ থেকে চিরদিনের জন্য মুক্তি ইনশাআল্লাহ্। তিনি কেন মৃত্যু নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হবেন? আমাদের প্রথমত আখিরাতের পাথেয় একেবারেই নগন্য আবার দুনিয়ার প্রতি রয়েছে সীমাহীন ভালোবাসা। তাই আমরা মৃত্যুকে ঘৃণা করি। হাদিসে যাকে ‘ওয়াহান’ বলা হয়েছে। আল্লাহ্ আমাদের হেফাজত করুন। আমীন।
.
#Tasbeeh





৩৩-
‘‘আল্লাহর ভয়ে কান্না আসা’’ এমন এক নেয়ামত, যার লাভ বলে শেষ করা যাবে না। যে এই নেয়ামত পেয়েছে সে বড়ই ভাগ্যবান! কারণ ঐ ব্যক্তি তার চোখের পানি দিয়ে আল্লাহর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সবকিছু চেয়ে নিতে পারছে—সুবহানাল্লাহ!
.
আপনি এমন কাকে পাবেন, যে আপনাকে কোন বিনিময় ছাড়াই যা চাবেন তাই দিবে?
.
ওয়াল্লাহি! আমাদের রব আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার কাছে যেকোনো বৈধ বিষয়/জিনিস চান তিনি তাই দিবেন, যদি আপনি চাওয়ার মত চাইতে পারেন। হয়ত সেটা সাথে সাথেই পাবেন অথবা এটার বদলে অনাগত কোনো বিপদ দূর করে দেবেন কিংবা বিনিময়টা আখিরাতের জন্য বরাদ্দ থাকবে। দু'আ বৃথা যায় না।
.
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ সাহাবায়ে আজমাঈন আল্লাহর স্মরণে শিশু বাচ্চার হাউ-মাউ করে কাঁদতেন। কেউ চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠতেন। এমনকি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কাঁদতেন তখন তাঁর বুকে ফুটন্ত পানির মত শব্দ করত। (আবু দাউদ, তিরমিযি, নাসাঈ)
.
উমর (রা.)-এর মত রাগী মানুষটির কান্না মাসজিদের শেষ কাতার পর্যন্ত শোনা যেত বলে বর্ণনা করেছেন আরেক সম্মানিত সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনু শাদ্দাদ (রা.)।
.
এই কান্না যার আসে না তাকে আল্লাহ দুনিয়াতে এক ধরণের শাস্তির মধ্যে ফেলেছেন। কারণ চোখ অশ্রুহীন থাকা অন্তরের কাঠিন্যের পরিচায়ক। সালফে সালেহিন (পূর্ববর্তী নেককারগণ) আল্লাহর ভয়ে এতই কাঁদতেন যে, কারো কারো চোখে ছানি পড়ে গিয়েছিল, কারো রক্ত-প্রস্রাব বের হতো, কেউ বেঁহুশ হয়ে যেতেন। আমাদের মত আল্লাহর নাফরমান বান্দাদের কাছে এগুলো রূপকথার গল্প বলেই মনে হবে। আল্লাহ তাঁদের সবাইকে শান্তিতে রাখুন। আমাদেরকেও তাঁদের পথে পরিচালিত করুন। আমীন।
.
প্রিয় আলেম মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ হাফিযাহুল্লাহ্ বলেন, ‘‘অশ্রুর যখন জোয়ার আসে, পাপের আবর্জনা তখন ভেসে যায়; হৃদয় তখন স্বচ্ছ ও পবিত্র হয়; মুনাজাত ও প্রার্থনা তখন বড় মিনতিপূর্ণ হয়।’’ [বাইতুল্লাহর মুসাফির, পৃষ্ঠা: ১৭]
.
তাই, আসুন আল্লাহর ভয়ে কাঁদি, তাঁর ভালবাসায় নিজেদের উৎসর্গ করি। তিনি আমাদের মুখে সেদিন হাসি ফুটাবেন, যেদিন সবাই ভয়ে তটস্থ থাকবে।
.
#Tasbeeh

৩৪-
দিন শেষে আমাদের আল্লাহর কাছেই ফিরে যেতে হবে। করোনা মহামারীর মত ছড়িয়ে পড়েছে, আল্লাহর হুকুমেই এটা হয়েছে। আবার এটা থেকে যদি আমরা বাঁচতে পারি তো আল্লাহর অনুগ্রহেই পারবো। আমাদের উপর যে সব বিপদ আপদ আসে তা দূর করার একমাত্র মালিক আল্লাহ্। আমরা তারই দিকে ফিরে যাই।

এ সময় করণীয় হলোঃ
১. ফরজ আমল ঠিকমত করা।
২. ইস্তিগফার করা৷ খুব বেশি গোনাহ মাফ চাওয়া, রোনাজারি করা। আমাদের গোনাহের কারণেই আমাদের উপর আজাব আসে৷ তাই বেশি বেশি ইস্তিগফার করা চাই।
৩. সকাল, বিকালের জিকিরগুলো নিয়মিত করা। এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হিফাজতের জন্য নিয়মিত করা দরকার৷
৪. স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলা।
৫. আল্লাহর কাছে দুয়া করা। তিনি যেন আমাদের এই আজাব থেকে উদ্ধার করেন।
যারা এখনো গোনাহ এবং ফাহেশা কাজে লিপ্ত। আপনাদের কি ফিরে আসার সময় হয়নি?



৩৫-
প্রিয় ভাই-বোনেরা, ভয় পাবেন না। মুমিনদের জন্য আল্লাহর রাসূলের ওয়াদা আছে, মহামারীতে মৃত্যু হলে শহিদি মৃত্যু হবে। চলমান এই বিপর্যয় থেকে বাঁচতে আল্লাহর দিকে চূড়ান্তভাবে ফিরে যাওয়া ব্যতীত সত্যিই আর কোনো উপায় নাই। সাধ্যমত সতর্ক থাকুন, তাওবাহ-ইস্তিগফারে লেগে যান। চোখ, মুখ এবং কানের হেফাজত করুন, এসব অঙ্গের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকু। সর্বোপরি নিজের উত্তম সমাপ্তির জন্য প্রস্তুতি নিন। নিজেদের ওসিয়তনামা প্রস্তুত করুন। আল্লাহর তাকদিরে সন্তুষ্ট থাকুন।

সবশেষে মাথায় রাখুন, এই দুনিয়ায় মুমিনের হারানোর কিছু নেই। নেক আমল নিয়ে যেতে পারলে সুখ-শান্তি ও নিরাপত্তার কোনো অভাব হবে না ইনশাআল্লাহ্।
সবাইকে আল্লাহ্ ভালো রাখুন, সুস্থ রাখুন, ঈমানি হালতে মৃত্যু দান করুন। আমীন।



৩৬-
মানুষের কৃতকর্মের দরুন জলে-স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে; যাতে ওদের কোন কোন কর্মের শাস্তি ওদেরকে আস্বাদন করানো হয়। যাতে ওরা (সৎপথে) ফিরে আসে। [1](সূরা রুম-৪১)


[1] ‘স্থল’ বলতে মানুষের বাসভূমি এবং জল বলতে সমুদ্র, সামুদ্রিক পথ এবং সমুদ্র-উপকূলে বসবাসের স্থান বুঝানো হয়েছে। ‘ফাসাদ’ (বিপর্যয়) বলতে ঐ সকল আপদ-বিপদকে বুঝানো হয়েছে, যার দ্বারা মনুষ্য-সমাজে সুখ-শান্তি ও নিরাপত্তা বিনষ্ট হয় এবং মানুষের শান্তিময় জীবন-যাত্রা ব্যাহত হয়।

এই জন্য এর অর্থ গোনাহ ও পাপাচরণ করাও সঠিক। অর্থাৎ, মানুষ এক অপরের উপর অত্যাচার করছে, আল্লাহর সীমা লংঘন করছে এবং নৈতিকতার বিনাশ সাধন করছে, হত্যা, খুন ও রক্তপাত, সুদ-ঘুষ,দুর্নীতি, 

নাচ-গান, যিনা-ব্যভিচার-পরকীয়া, নারী-পুরুষ অবাধ মেলামেশা, নারীদের বেপর্দা চলাচল,


 খাদ্যে ভেজাল,ওজনে কম দেয়া, অবৈধ মজুদদারি, নিয়মিত নামাজ না পড়া 


এবং অতীতে ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতির বিভিন্ন কারণ বিদ্যমান থাকা, পবিত্র কুরআনের নির্দেশ অনুযায়ী সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নির্দেশ না দেয়া ইত্যাদি সাধারণ ব্যাপার হয়ে পড়েছে। 


অবশ্য ‘ফাসাদ’-এর অর্থ আকাশ-পৃথিবীর ঐ সকল বিপর্যয় নেওয়াও সঠিক, যা আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি ও সতর্কতা স্বরূপ প্রেরণ করা হয়। যেমন দুর্ভিক্ষ, মহামারী, অনিরাপত্তা, ভূমিকম্প, বন্যা ইত্যাদি। উদ্দেশ্য এই যে, যখন মানুষ আল্লাহর অবাধ্যতাকে নিজেদের অভ্যাসে পরিণত করে নেয়, 


তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিফল স্বরূপ তাদের কর্মপ্রবণতা মন্দের দিকে ফিরে যায় এবং তার ফলে পৃথিবী নানা বিপর্যয়ে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, সুখ-শান্তি বিলীন হয় এবং তার পরিবর্তে ভয়-ভীতি, নিরাপত্তাহীনতা, ছিন্তাই-ডাকাতি, লড়াই ও লুটপাট ছড়িয়ে পড়ে। 


তার সাথে সাথে কখনো আকাশ ও পৃথিবীর বিভিন্ন আপদ-বিপদ (প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুরারোগ্য ব্যধি, মহামারী )ও প্রেরিত হয়। আর তাতে উদ্দেশ্য এই থাকে যে, ঐ সর্বনাশী বিপর্যয় ও আপদ-বিপদ দেখে সম্ভবত মানুষ পাপকর্ম থেকে বিরত হবে এবং আল্লাহর কাছে তওবা করে পুনরায় তাঁর আনুগত্যের দিকে ফিরে আসবে। 


এর বিপরীত যে সমাজের রীতি-নীতি ও চাল-চলন আল্লাহর আনুগত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং যে সমাজে আল্লাহর ‘হদ্দ’ (দন্ডবিধি) কায়েম হয়, অত্যাচারের জায়গায় ন্যায়পরায়ণতা বিরাজ করে, সে সমাজে সুখ-শান্তি এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে মঙ্গল ও বরকত দেওয়া হয়।


 যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, ‘‘পৃথিবীতে আল্লাহ তাআলার একটি ‘হদ্দ’ কায়েম করা সেখানকার মানুষের জন্য চল্লিশ দিনের বৃষ্টি থেকেও উত্তম।’’ (নাসাঈ, ইবনে মাজা) অনুরূপ একটি হাদীসে এসেছে, ‘‘যখন একটি পাপাচারী মারা যায়, তখন শুধু মানুষই নয়; বরং গ্রাম-শহর, গাছপালা এবং প্রাণীরাও পর্যন্ত শান্তিলাভ করে।’’ (বুখারীঃ কিতাবুর রিক্বাক, মুসলিমঃ কিতাবুল জানাইয)

-তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অভিমূখী হও এবং তাঁর আজ্ঞাবহ হও




৩৭-
আর কয়েকদিনের মধ্যেই পবিত্র শবে মেরাজ। দিনটি একটি ঐতিহাসিক দিন। কারণ এরাতেই সমগ্র মুসলিম জাহানের জন্য আমাদের রাসূল (সাঃ) মহান আল্লাহর কাছ থেকে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের বিধান নিয়ে আসেন।

তিনি নয়বারে পাঁচ ওয়াক্ত করে নামায কমিয়ে মহান আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করে পাঁচ ওয়াক্তে নামিয়ে আনেন যাতে তাঁর উম্মাতের জন্য সহজ হয়।

চিন্তা করুন যদি আমাদের উপর দৈনিক পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফর‍য হতো তাহলে অবস্থা কি হতো যদিও মহান আল্লাহ আমাদের এ ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদত ও আনুগত্যের জন্য পাঠিয়েছেন।

যাইহোক আমাদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাযই ফরয কিন্তু আমরা শেষ ও শ্রেষ্ঠ নবীর উম্মত হিসাবে পুরো পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাযের সওয়াবই পাব। কিন্তু না পড়লে আবার পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাযের সমান গুনাহই পাব।

কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী নামায ঈমান ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টিকারী। তাহলে কেন আমরা(নারী-পুরুষ) নিয়মিত ঠিকমতো নামায পড়ি না? কেন নিজেদের পরিবার-পরিজন ও অধিনস্তদের নামাযের জন্য তাগিদ দেই না?

অথচ শেষ বিচারের দিন সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব নেয়া হবে? সেদিন আমরা কি জবাব দিব? রাসূল (সাঃ) ও সাহাবিদের যুগে কেউ যদি ফজরের নামায জামাতে আদায় না করত বিনা কারণে তাহলে তাকে মুনাফেকের কাতারে বিবেচনা করা হতো। তাহলে আমাফের কি অবস্থা?

 এই মুহূর্তে আমাদের কারো মৃত্যু হলে আমরা যারা নিয়মিত নামায না পড়ি তারা আল্লাহর কাছে কি জবাবা দিবো?আর নামায মানুষকে খারাপ ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকতে সাহায্য করে এবং দৈনিক কমপক্ষে পাঁচবার আল্লাহকে স্মরণ করায়।

পবিত্র কুরআনে নামাযকে কায়েম করতে বলা হয়েছে অর্থাৎ শুধু নিজেই নয় ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সকল জায়গায় ও ক্ষেত্রে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামায প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। অথচ কিছুদিন আগে এক গার্মেন্টসে নামায বাধ্যতামূলক করায় সরকার ও প্রশাসন তাতে বিধিনিষেধ আরোপ করে ও কাউকে(মুসলিমদেরকে) নামায পড়ায় বাধ্য করা যাবে না বলে নির্দেশনা জারি করে।

আবার পর্দায় ক্ষেত্রেও নারীদের পরিপূর্ণ ও শরিয়াতসম্মত পর্দা করতে বিধি-নিষেধ আরোপ করে ও পর্দার ক্ষেত্রে পর্দা করা নারীদের শর্ত আরোপ করে দেয়(আচ্ছা পর্দা করা নারী পরাধীনতা আর পর্দা না করা নারী স্বাধীনতা অথচ পর্দা করা তো শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য,

যারা নারী স্বাধীনতা চায়, নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলে তারা কি তবে চায় নারী পথে ঘাটে যেখানে সেখানে ধর্ষিত হোক, যৌন হয়্রানির শিকার হোক, যিনা ব্যভিচার বৃদ্ধি পাক, পরপুরুষের সাথে বেশি মেলামেশা হোক,

বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে যুবতী মেয়েদের ভোগ করা হোক, সবাই একাধিক সম্পর্কে জড়াক, পরকীয়ায় জড়াক, পরিবার প্রথা উঠে যাক, যুবকদের চরিত্র ধ্বংস হোক)।

বর্তমানে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুরোপুরি পর্দাও উঠিয়ে ফেলার চেষ্টা করে যাচ্ছে, আপনারা খবর নিয়ে দেখবেন। ওই হল সেকুলার সমাজ ও রাষ্ট্রের অবস্থা। এমনকি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে অনেক অমুসলিমদের পদস্থ করে রেখেছে যা মুসলিম রাষ্ট্রের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ধর্মনিরপেক্ষতা এক জিনিস নয়।

ধর্মনিরপেক্ষতার আইডিওলোজী দেখিয়ে মুসলিম রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ও পদে অমুসলিমদের পদস্থ, মতামত নেয়া ও ক্ষেত্র বিশেষে অগ্রাধিকার দেয়া হয় যা মুসলিমদের জন্য বিপজ্জনক। ভারতে মুসলিম নির্যাতন শর্তেও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ মোদী ও তার নেতৃত্বাধীন সরকার ও বাহিনীর জোরালো নিন্দা করেনি। এই দেশে মোদীর আগমণের ক্ষেত্রে প্রতিহতের দাবি করেনি। অথচ তারা এই দেশে এত ভালো থাকা স্বত্তেও মুসলিমদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে ও বাইরের দেশের হস্তক্ষেপ কামনা করে। এদেশের কথিত সুশীলরাও তাদের পক্ষে কথা বলে।



আবারো বলছি ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা এক জিনিস নয়। ধর্মনিরপেক্ষতা ইসলামের দৃষ্টিতে একটি কুফরি মতবাদ। 

রাসুল (সাঃ) ও সাহাবিদের যুগে তাঁরা অমুসলিমদের চুক্তিভিত্তিক ও জিযিয়া করের বিনিময়ে তাদেরকে তাঁরা নিজ ভূখণ্ডে থাকতে দিতেন ও ধর্মীয় স্বাধীনতা দিতেন কিন্তু রাষ্ট্রে ইসলামের শাসন ও শরিয়া অর্থাৎ কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা জারি ছিল

 যা মূলত মানব রচিত শাসন ব্যবস্থা ছিল না, এমনকি আলাদা সংবিধানও ছিল না, কুরআনই ছিল সংবিধান এবং অমুসলিমদের রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে দেয়া হতো না। 

তারা(অমুসলিমরা) চুক্তি ভংগ করলে তাদের শাস্তি দিতেন অথবা প্রয়োজনে যদ্ধ ঘোষণা করতেন তবু্ও বর্তমান মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের তুলনায় তখনকার অমুসলিমরা মুসলিমদের আন্ডারে অনেক নিরাপদে ও জুলুমবিহীনভাবে বসবাস করত।




৩৮-


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "যদি তোমার লজ্জা-শরম না থাকে, তাহলে যা ইচ্ছা তা-ই করো।" [বুখারী, আদাবুল মুফরাদ হা/১৩২৯]


শয়তানের সকল চেষ্টা-মেহনত থাকে বান্দাকে কোন না কোনভাবে ‘ফাহেশাহ’ (অশ্লীল, নোংরা বা জঘন্য) কাজে লিপ্ত করানোর জন্য। কারণ ফাহেশাহ কাজে লিপ্ত হলে মানুষের লজ্জা-শরমের অনুভূতি নষ্ট হয়ে যায়, ফলে সে বিবেক-বুদ্ধি হারিয়ে পশুর স্তরে নেমে যায়।

 এমতাবস্থায় তাকে দিয়ে শুধুমাত্র জিনা-ব্যভিচারই নয়, যাবতীয় খারাপ কাজই করানো যায়।

এজন্যে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত নারী ও পুরুষেদেরকে মদ বা মাদকাসক্তি, ধোঁকা ও প্রতারণা, ধর্ষণ, খুন-খারাপি এহেন কোন খারাপ কাজ নেই যে তাদের দিয়ে হচ্ছেনা, আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের ভিকটিম হচ্ছে তাদের কুকর্মের সংগী বা সংগিনীরাই।


এ কারণে শয়তানের চক্রান্তের ব্যপারে তাঁর বান্দাদেরকে সতর্ক করে আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লা বলেন,

“আর তোমরা শয়তানের পদাংক অনুসরণ করোনা, সে তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।

 শয়তান তো তোমাদেরকে আদেশ করে খারাপ ও ফাহেশাহ (অশ্লীল) কাজ করতে, এবং আল্লাহ সম্পর্কে এমন কথা বলতে যা তোমরা জানো না।” সুরা আল-বাক্বারাহঃ ১৬৮-১৬৯।
________
.

বর্তমান যুগে মুসলিম সমাজে ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়া অশ্লীল কাজের মধ্যে রয়েছেঃ





  • (১) বিয়ে বহিঃর্ভূত অবৈধ যৌনকর্মে লিপ্ত হওয়া।

  • (২) হস্তমৈথুন (masturbation) করে যৌনতৃপ্তি নেওয়া।

  • (৩) পর্ণোগ্রাফী বা অশ্লীল ছবি ও ভিডিও দেখা।

  • (৪) ফোন সেক্স বা ফেইসবুক, মোবাইল ও ইন্টারনেটে নারী পুরুষের মাঝে যৌন কথা-বার্তা বলা।

  • (৫) নারী ও পুরুষের মাঝে অবৈধ প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্ক রাখা এবং দেখা-সাক্ষাৎ করা ও কথা বলা।

  • (৬) রাস্তা-ঘাটে, অফিস-আদালতে বা পার্কে নারীদের বেপর্দা ও অশ্লীল পোশাক পড়ে বের হওয়া।

  • (৭) পার্ক, মেলা, উদ্যান ইত্যাদি দর্শনীয় স্থানসমূহে কিংবা রাস্তাঘাটে যানবাহনে বা ইউনিভার্সিটিতে নারী-পুরুষে অশ্লীল কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়া।

  • (৮) হিন্দী, বাংলা কিংবা ইংরেজী নাটক, সিনেমা, সিরিয়াল বা টিভি-শো দেখা, যেখানে মূল বিষয় হচ্ছে কোন না কোনভাবে নগ্ন নারীদেহ, নারী-পুরুষের অন্তরংগ সম্পর্ক ও যৌনতা প্রদর্শন করা।

  • (৯) প্রেম-ভালোবাসার গান শোনা।

  • (১০) প্রেম-ভালোবাসার উপরে গল্প, উপন্যাস পড়া।

  • (১১) লাক্স-চ্যানেল আই সুন্দরী প্রতিযোগিতা, ক্লোজ-আপ গানের প্রতিযোগিতা, নারী-পুরুষের নাচ-গানের আসর ও কনসার্ট।

  • (১২) ভ্যালেনটাইন ডে, থার্টি ফার্স্ট, নববর্ষ, পহেলা বৈশাখ পালন ইত্যাদি।


কবরে গেলে প্রতিটি সেকেন্ড, প্রতিটা মিনিটের হিসাব দিতে হবে। আর আল্লাহ কোন কিছু ভুলে যান না, আল্লাহর ফেরেশতারা প্রতিটা কথা ও কাজ আমল নামায় লিখে রাখছেন।

সর্বশেষ, একটা আয়াতঃ

“তোমরা কি মনে করো যে, (হিসাব-নিকাশ ছাড়াই) তোমাদেরকে এমনি ছেড়ে দেওয়া হবে?” [সূরা কিয়ামাহ (৭৫), আয়াত ৩৬]

তথাকথিত উদারমনা ভণ্ডদের দিমুখিতা 

 খুলনায় ১৫ দিনের বেইসিক ট্রেনিং ছিল। চাকরিবিধি, অফিসওয়ার্ক এসব নিয়ে। তো একটা সেশন ছিল 'নৈতিকতা' নিয়ে। নীতিশাস্ত্রে এটা একাডেমিক কথা যে, নৈতিকতার মৌলিক উৎস হল: দর্শন ও ধর্ম। ধর্মীয় নৈতিকতাকে রিলেটিভিজমে আনা হবে, নাকি কালচারাল রিলেটিভিজম হিসেবে দেখা হবে, তা নিয়ে একাডেমিক আলাপ আছে, বিতর্ক আছে।


 কিন্তু নৈতিকতার একটা উৎস হিসেবে ধর্মের স্থান আছে, আলোচনা আছে, সেক্যুলার জ্ঞানকাঠামোয় স্বীকৃতি আছে। জনাত্রিশের মাঝে আবার ২৬/২৭ জন আমরা মুসলিম ছিলাম। একজন দাড়িওয়ালা উপসচিব পর্যায়ের অফিসার ক্লাসটা নিলেন এবং খুবই স্বাভাবিকভাবে তিনি ইসলামের নানান প্রসঙ্গ কুরআনের আয়াত, হাদিস উল্লেখ করে উপস্থাপন করলেন। সূরা তাকাসুরের 'প্রাচূর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদের মোহাচ্ছন্ন রাখে' বিষয়টাকে কেন্দ্র করে বুঝানোর চেষ্টা করলেন, প্রাচূর্যের তুলনায় নৈতিকতা কেন বড়।

 অমুসলিম জনাতিনেক কলিগকে বার বারই তিনি বলছিলেন, আপনাদের ধর্ম কী বলে তা তো আমি জানিনা, তবে নীতি-নৈতিকতার দিক থেকে সব ধর্ম কাছাকাছি কথাই বলে, আপনাদের ধর্মেও এমন কনসেপ্টই বলা আছে দেখবেন। এরপরও ক্লাস শেষে আমার হিন্দু কমিউনিস্ট কলিগ যে মন্তব্যটা করলেন: "বাপরে বাপ, ২ ঘণ্টা ইসলাম শিক্ষা ক্লাস করে ক্লান্ত হয়ে গেলাম"। 

ইঙ্গিতটা ছিল, একটা সেক্যুলার ফোরামে তিনি কেন ইসলামী কথা বললেন। এটা একটা মজার সাইকোলজি। 'সংসার মায়া' জাতীয় কথা বুদ্ধ-গীতা থেকে কোট করলে কিন্তু আপনার সেকুলারিতা নষ্ট হয় না, বরং বাড়ে। কিন্তু 'দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী' জাতীয় নবীজীর হাদিস কোট করলে সেকুলারিতা অপবিত্র হয়।

 যেকারণে ওনার ঐ ক্লাসটা সেদিন 'নৈতিকতার ক্লাস' বলে আমার কলিগের মনে হয়নি, বরং ইসলাম শিক্ষার ক্লাস মনে হয়েছে। বেদের কথা কোট করলে আপনি ৩০০০ বছর আগে চলে যান না, কিন্তু হাদিস-কুরআনের কথা বললে আপনি কিন্তু ১৪০০ বছর পিছিয়ে যান। এরপরও মুসলিমরা বোঝে না, ইসলাম কেন আলাদা, কেন সেকুলারিতার সাথে সবাই আপোসে যায়, ইসলাম যায় না।

যেকোনো ফোরামে কেউ ইসলামের কোনো বক্তব্য তুলে ধরলে আধুনিক সাজার খুব সহজ উপায় হল: 'সবখানে ধর্ম টেনে আনবেন না', এটা বলা। দেখবেন লোকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখবে আপনাকে, অয়াও, কী অপেন মাইন্ডেড। অথচ সে জানে না সে জ্ঞানতাত্ত্বিকভাবে একটা মূর্খ। নৈতিকতা ইস্যুতে অবশ্যই ধর্মের অবস্থান স্বীকৃত তার পিতৃদেশীয় একাডেমিয়ায়।


সে জানে না সায়েন্স-রিলিজিয়ন কম্পারেটিভ স্টাডি হয় মনিবের দেশে। সে জানে না রিলিজিয়ন-ফিলসফি কম্পারেটিভ স্টাডি হয় মালিকের দেশে। সায়েন্সের ইস্যুতে, দর্শনের ইস্যুতে, নৈতিকতার ইস্যুতে ধর্মীয় আলাপ কে কীভাবে নেবে, কতটুকু নেবে সেটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু আলাপের জায়গা আছে, আলাপ আছে। আলাপ টেনে আনাই যাবে না, এ কথা তো মনিবেরা বলেনা ভাই। পীরের চেয়ে মুরিদ সবসময়ই এককাঠি সরেস।


সুতরাং, কোনোরকম হীনম্মন্যতা না করে যেকোনো আলাপে ইসলামের বক্তব্য তুলে ধরুন। কেউ মোচড়ামুচড়ি করলে উপরের দু'কথা শুনিয়ে দিন। তার আধুনিকতার তলে মূর্খামি আর তৃতীয় ছাগশিশুতাকে তুলে ধরুন। না মানলে না মানবেন, কিন্তু শুনতে হবে, বলতে দিতে হবে। 'আনাই যাবে না' এ জাতীয় অশিক্ষিত মনোভাব রেখে এসে আধুনিক সাজতে হবে ব্রো।

- শামসুল আরেফিন শক্তি 

Next Post Previous Post