শীতের ছবি | শীতের সকালের ছবি ডাউনলোড, ক্যাপশন ও কুয়াসাচ্ছন্ন গ্রাম
শীত কালের কুয়াশার ছবি, ৮০ কিংবা ৯০ দশকের শীতকালের সুন্দর স্মৃতি নিয়ে লেখা গল্প একসাথে পেয়ে যাবেন এই পোস্টে।
- শীত কালের ফুলের ছবি,
- কুয়াশার ছবি
- গ্রামের পিকচার
শীতের সকালের ছবি
শীতের ছবি ডাউনলোড
শীত নিয়ে লেখা শীতের গল্প
#৩০১৯
আশি-নব্বইয়ের দশকে, অথবা দু হাজার সালের পরের কয়েকটা বছর যারা ঢাকায় ছেলেবেলা কাটিয়েছেন তারা চোখ বুজলে এখনো ঢাকার মিষ্টি শীত দেখতে পান, যে শীত আমাদের কাছ থেকে চুরি হয়ে গেছে।
ঢাকার শীতের সকালগুলো হত কুয়াশায় ভরপুর, তখন পর্যন্ত জ্যামগুলি সেভাবে সারা শহরে দানা বেধে উঠে নি। মানুষের হাতে মোবাইল ফোন ছিল না, তাই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই ইমেইল চেক করার ব্যাপারটা মাথায় আসতো না। করপোরেট কালচার তখনো ঢাকার সঙ্গী হয় নি, তাই চাকরিজীবী ছাড়া বাকিদের ততটা তাড়াহুড়ো ছিল না, ঘুম থেকে উঠে চা খেয়ে তারপর ধীরে সুস্থে বাইরে বেরোতেন বেশিরভাগ মানুষ।
ট্রাফিক জ্যাম কিছু হটস্পট ছাড়া শহরের বাকি অংশটাকে তখনো জাপটে ধরে নি। রামপুরা থেকে শাহবাগ আসতে সময় লাগতো পয়ত্রিশ থেকে চল্লিশ মিনিট।
মহল্লাগুলোতে শীত শুরুর সাথেই শুরু হত ছুটির আমেজ, স্কুল কলেজ বন্ধ হয়ে যেত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি, তারপর বাচ্চারা কেউ বেড়াতে যেত গ্রামের বাড়ি, কেউ বা ঢাকাতেই অন্যান্য আত্মীয়দের বাসায়। মহল্লার খোলা জায়গাগুলোতে অথবা খেলার মাঠে চলতো ক্রিকেট-ফুটবল বা ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট। সকালের শীতে কম্বল মুড়ি দিয়ে পড়ে থাকা কিশোর-তরুণেরা বেলা দশটার পর দলে দলে সোয়েটার চাপিয়ে বের হত খেলতে, তাদের তখন হালি হালি প্রাইভেট আর কোচিং ছিল না।
দুপুরের খাবারের পর বিকেল ৩টার মধ্যে তৈরি হয়ে আবার ফিরতে হত খেলার মাঠে, কখনোবা বন্ধুদের আড্ডায়।
বিকেলের ঢাকার আকাশ ছেয়ে যেত রঙ বেরঙের ঘুড়ির ওড়াউড়িতে, দালানের ছাদে ছাদে ঘুড়ি ওড়াতে ভিড় জমানো ছেলেপেলের দল আর বারান্দায় বারান্দায় তাদের সাথে চোখাচুখি করতে হাজির হত মেয়েরা।
ব্যালকনিতে শুকোতে দেয়া কাপড়ের ফাকে চোরাচোখের সেই লুকোচুরির আশায় থাকা এনালগ প্রেমিক-প্রেমিকারা তখন আসলেই প্রেমে পড়তো।
সন্ধ্যায় ধীরে ধীরে লাল হয়ে যাওয়া আকাশের সাথে সাথে শুরু হত ঘরে ফেরার পালা। একটূ দুষ্টু ছেলেরা তখন গা গরম করতে অলিগলির অন্ধকারে মুরুব্বিদের চোখ এড়িয়ে সিগারেট টানতো।
এত এত খাবারের দোকান ছিল না, জলখাবার ছিল তাই ্সিঙ্গাড়া-পুরি, আর বাসায় মা-বোন-ভাবীদের বানানো পিঠা। নব্বই দশকের শেষ তক ঢাকায় গরুর দুধ আর খেজুর রস পাওয়া সম্ভব ছিল।
চাকরিজীবীরা বাসায় এসে আবার ল্যাপটপ নিয়ে বসে যেতেন না। অর্থনৈতিক দাসত্ব তখনো মধ্যবিত্তের ওপর চেপে বসে নি।
সাতটার পর ধীরে ধীরে বাসার সবাই চলে আসতো খাট আর সোফায়। সাদাকালো অথবা রঙ্গিন টিভির পর্দায় শুরু হত কোন ডাবিং করা বিদেশী মেগা সিরিয়াল, অথবা ছায়াছন্দ। তারপর, রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর আসতো ধারাবাহিক নাটকের পালা।
সেই শীতগুলোয় রাত দশটার পর মানুষ ঘুমিয়ে পড়তে পারতো। তখন রাত জেগে চ্যাট করা বা ফোনালাপের সুযোগ ছিল না। তখন আড্ডা দিতে রেস্টুরেন্টে বসতে হত না।
জীবনের সাথে আকাশ তখনো নাটাই-সুতো দিয়ে বাধা ছিল, ঘুড়ি হয়ে আকাশে ওড়া মনগুলো তখনো ঘড়ির গোলাম হয়য়ে ওঠে নি।
সোয়েটার-জাম্প কেডসের যুগ শেষ হয়েছে আজ বেশ ক'বছর।
আমাদের জিডিপি হয়েছে মাথাপিছু ষোলশো ডলারের বেশি। আমরা হাতে পেয়েছি মুঠোফোন, ল্যাপটপ, ফেইসবুক, হোয়াটসএপ, সারি সারি খাবার দোকান, উবার, পাঠাও, প্রাইভেট কোচিং সেন্টার, ফ্লাইওভার......আরো কত কি!!
উন্নয়নের পথে চলতে চলতে আমরা হারিয়ে ফেলেছি খেলার মাঠ, নাটাই-ঘুড়ি, মায়ের হাতের পিঠা, সকালবেলার মিষ্টি রোদ......
উন্নয়নের ধুলোয় ঢাকা ঢাকার আকাশে এখন আর শীতের সূর্য হাসে না, ও বেচারা মারা পড়েছে ধুলো-ধোয়ার রাসলীলাতে। নীল রঙ হারানো আকাশে নেই ঘুড়ি আর কবুতরের ঝাঁক।
ব্যালকনিতে এখন আর কারো দাঁড়িয়ে না থাকলেও চলে।
আমরা সেই লাজুক চোখগুলোকে হারিয়ে ফেলেছি।
- Muhammad Sajal
শীতের ফুলের ছবি :
- মঞ্জুরুল করিম ( কালের কণ্ঠ )
শীতের ছবির ক্যাপশন
যদিও এই পোস্ট তা যখন করছি তখন অলরেডি শীত চলে যাচ্ছে আর গরম ফিরে আসছে আমাদের মাঝে । তবুও অনেকে আছে গরম কালেও শীতের ছবি পিকচার খুঁজে! তাদের জন্য শীতের ছবির কালেকশন পিকচার।