দাঁত উজ্বল করার টিপস
১। প্রতিদিন নিয়ম করে সকাল ও রাতে (ঘুমানোর আগে) ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ করা উচিত।
২। চর্বি, পনির বা ক্রিম জাতীয় খাবার হলে অবশ্যই খাবার পর ব্রাশ করে কয়েকবার কুলি করা উচত। কারণ চর্বি ও শর্করাযুক্ত খাবার দাঁতের ফাঁকে জমে দাঁতকে দ্রুত ক্ষয় করতে সাহায্য করে। দাঁতের উপরিভাগে খাদ্যকণা মিশ্রিত তেল জমে থাকে দাঁতের মসৃণতা নষ্ট করে।
আরো পড়ুন ঃ কালো নখের যত্ন নিবেন কীভাবে?
৩। খাবার পানি ফুটিয়ে পান করা উচিত। ফুটানো সম্ভব না হলে অবশ্যাই নলকূপের পানি পান করা উচিত।
৪। জিকজ্যাক পদ্ধতিতে (উপরে, নিচে, ভেতরে, বাইরে) দাঁত ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
৫। ব্রাশের সমান্তরাল স্টিকের পরিবর্তে বাঁকা হওয়া প্রেয়োজন। এতের করে মুখের ভেতরের দাঁতগুলো সুন্দর ভাবে পরিষ্কার হবে।
৬। আঁকা বাঁকা দাঁতে ময়লা জমে বেশি, তাই একটু বেশী সময় নিয়ে ব্রাশ করা উচিত। অনেক সময় একই স্থান থেকে একাধিক দাঁত গজায়। অপারেশনের মাধ্যমে দাঁত তুলে ফেলা যায় বা সমান্তরালহীন দাঁতগুলোকে সমান্তরাল এ আনা যায়। এ জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৭। দাঁতের ফাঁকের ময়লাগুলো দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকলে ক্ষুদ্র পাথর কণায় পরিণত হয়। তখন দাঁতের উপরি ভাগে কালো কালো দাগ পড়ে। এটা ভীষণ দৃষ্টিকটু দেখায়। এ জন্য প্রতি ৬মাস পরপর দাঁতের স্কেলিং করানো উচিত। বয়স ৪০-এর বেশী হলে এক বছর পরপর করাতে হবে।
৮। প্রতি চার থেকে পাঁচ মাস পর ব্রাশ পরিবর্তন করুন। সম্ভব হলে একই সঙ্গে সমান্তরাল ও বাঁকা দন্ডের ব্রাশ ব্যবহার করুন। প্রত্যেক মাসে দুটো ব্রাশকে এক ফোঁটা স্যাভলন বা ডেটল মিশ্রিত এক বাটি হালকা গরম পানিতে ২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পরে ব্রাশ দুটোকে স্বাভাবিক পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন, যেন স্যাভলন বা ডেটলের গন্ধ না থাকে। প্রয়োজন হইলে টুথপিক দিয়ে ব্রাশের গোড়া ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। ধুলোবালি, পোকা-মাকড় থেকে রক্ষার জন্য কভারযুক্ত ব্রাশ ব্যবহার করুন।
৯। অনেকের সারিবদ্ধ দাঁতের মধ্যে যেকোনো একটি বা দুটি দাঁত থাকে ত্রুটিযুক্ত হলুদ হয়। এ জন্য কোনো প্রসাধনীর ব্যবহার না করে দ্রুত চিকিৎসের শরণাপন্ন হোন।
১০। দাঁতের উজ্বল করার জন্য অনেকেই খাবার সোডা ব্যবহার করেন। পারতপক্ষ সোডা ত্যাগ করুন। সোডায় ক্ষার থাকে। সেটা দাঁতের কোমল মাড়ির জন্য খুবেই ক্ষতিকর। অনেক সময় এটি দাঁতের অতি সংবেদনশীল মাড়ি পুড়ে লাল করে। স্বাভাবিক দৃষ্টিতে যা দেখতে জমাটবদ্ধ রক্তের মতো দেখায়।
১১। দাঁতের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধির জন্য মাঝে মধ্যেই মাউথ ওয়াশ দিয়ে কুলি করুন। যদি মাউথ ওয়াশ না থাকে তাহলে হাফ চা চামচ খাবার লবণ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন। প্রতিদিন লেবু বা অন্য কোনো টক ফল খান। ক্যালসিয়ামের অভাবে ও দাঁতের ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয়। এ জন্য ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ শাক-সবজি বেশী করে খান।
১২। খুব ঠান্ডা বা গরম পানীয় দাঁতের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। দুটো পানীয় একই সঙ্গে গ্রহণ করা উচিত নয়। খুব গরম চা বা কফি পানের অন্তত ৬০ মিনিট পরে নরমাল পানি পান করুন।
১৩। গ্যাসট্রিকের সমস্যা থাকলে মুখে দুর্গন্ধ হয়। ফলে দাঁতের হলুদাভ আবরণ আসতে পারে। নিয়মিত গ্যাসট্রিকে ঠোঁটের দুই কোণে কালো হয়ে যায়। এ জন্য আপনাকে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
১৪। অ্যালকোহল ও ধূমপানে করলে দাঁত কালো হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে দাঁতের মাড়িও কালো হয়ে ফুলে যায়। মাড়ির রক্তবাহী শিরাগুলো মোটা দেখায়, যা সুন্দর হাসির জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই অ্যালকোহল ও ধূমপান ত্যাগ করুন।
১৫। অনেকের দুটো দাঁতের মাঝে খানে ফাঁকা স্থান বা ভাঙা দাঁত থাকে। কৃত্রিম উপায়ে এই চিকিৎসা সম্ভব, এ জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। প্রত্যেক সপ্তাহে অন্তত একটা ভিটামিন-সিযুক্ত ট্যাবলেট খান।
১৬। পান, সুপারি, জর্দা বা গুল ত্যাগ করুন। এসবে আসক্তি থাকলে খাবার পরে ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ করে করুন। পানে চুনের পরিমাণ যতটা সম্ভব কম খান। অতিরিক্ত চুন দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে।
১৭। বাঁধানো দাঁত বা কৃত্রিম দাঁতের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হন। প্রায়ই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেগুলো খুলে ভালোভাবে পরিষ্কার করুন
- দাঁতের গোড়া শক্ত করার উপায়
- দাঁত ভালো রাখার উপায়
- দাঁত শিরশির করলে করণীয়
- দাঁতের মাড়ি ক্ষয় রোধ
- দাঁত ভালো রাখার উপায় কি
- দাঁতের যত্ন
- দাঁত ব্যাথার সমাধান
সঠিক সময়ে আমাদের যত্নের অভাবে দাঁতে ক্রমে আক্রমণ করে রোগ-জীবানুসহ বিভিন্ন ধরণের অসুখ। তখন অসময়ে দাঁত ও দাঁতের মাড়ি হয়ে ওঠে কালচে, ভঙ্গুর ও হলদে রংয়ের। যা সুন্দর মুখকে দেখায় খুবই বিশ্রী। এ