আহমদ মুসা যখন বাংলাদেশে - Saimum Series-সাইমুম সিরিজ

Saimum Series সাইমুম সিরিজ - আহমদ মুসা যখন বাংলাদেশে  : বাংলা থ্রিলার গল্প 

আমারই একটি পোস্টে আমি লিখেছিলাম যে—
"আহমদ মুসাকে বহনকারী বিমানটি এইমাত্র এসে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ল্যান্ড করলো" এমন একটি সংখ্যা হাতে পেতেই সাইমুম প্রেমীরা অধীর আগ্রহে বসে আছে।


এবার আসি এর বাস্তবতা কতটুকু সে কথায়।
আহমদ মুসা বাংলাদেশে আসলে কী হতে পারে একটা ধারণা নিই....
শুরুতেই আমরা বাঙালিদের কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা খুবই জরুরী—

* আমরা বাঙালিরা চরম অকৃতজ্ঞ জাতি। এটা স্বীকার না করলেও বিশ্বাস করতে হবে।
* আমরা নিজের প্রশংসা শুনতে ভালোবাসি কিন্তু অন্যের প্রশংসা করতে জানি না। এতে আমাদের ব্যক্তিত্ব নষ্ট হয়!
* অন্যের প্রাপ্য ক্রেডিট আমরা নিজেরা নিতে পছন্দ করি। প্রয়োজনে অন্যের নাক কেটে হোক।
* নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে পারি না বলে অন্যের প্রতিও আমাদের বিশ্বাস কম।
* অতিরিক্ত লোভ আমাদের বংশগত অভ্যাস। স্বার্থ ছাড়া আমরা এক পাও নড়ি না।


আরো অনেক বৈশিষ্ট্য আমাদের আছে। আপাতত এই বৈশিষ্ট্যগুলোকে সামনে রেখে আমরা আলোচনায় আসি.....

" হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের লাউঞ্জ থেকে বেড়িয়ে আসতেই হঠাৎ আহমদ মুসা মেয়েলি কন্ঠের 'বাঁচাও বাঁচাও' চিৎকার শুনতে পেল।

নিজের অজান্তেই আহমদ মুসার চোখ গিয়ে পড়লো মাত্র কয়েক গজ সামনে একটি কালো মাইক্রোর উপর। দেখলো কালো পোশাকধারী কয়েকজন মিলে একটি মেয়েকে টেনে গাড়িতে তুলছে। আহমদ মুসার সমস্ত সত্তা তখন জেগে ওঠেছে।


মেয়েটিকে গাড়িতে তোলা শেষ। চলতে শুরু করেছে মাইক্রোটি। কোনোকিছু ভাবার সময় আহমদ মুসার হাতে নেই। পাশেই দেখতে পেল একটি ট্যাক্সি। ড্রাইভার ট্যাক্সিতে ভর করে দাঁড়িয়ে আছে। আহমদ মুসা সামনে যেতেই ড্রাইভার বলল -
(পাঠক মনে রাখবেনঃ আহমদ মুসা এখন বাংলাদেশি ড্রাইভারের সাথে কথা বলছে)
ড্রাইভারঃ ভাই কোথায় যাবেন?
মুসাঃ ঐ যে কালো রঙের মাইক্রোটি যাচ্ছে, ওটাকে ফলো করবো।
ড্রাইভারঃ না ভাই। এসব কাজে আমরা যাই না।
মুসাঃ প্লীজ আমার হাতে সময় নেই। ঐ গাড়িটি একটি মেয়েকে কিডন্যাপ করেছে। তাকে আমি বাঁচাতে চাই। প্রয়োজনে আপনি বসে থাকুন আমি ড্রাইভ করবো।
ড্রাইভারঃ কিহ! মিয়া আমাকে বোকা পাইছো? তোমাকে ড্রাইভ করতে দেই আর তুমি আমাকে অজ্ঞান করে গাড়ি নিয়া পালাও!! ফাজলামির আর জায়গা পাওনা? তোমার মতো কত বাটপার জীবনে দেখলাম!

আর তোমার মতো পুচকে ছেলে এত্তগুলা গুণ্ডাদের হাত থেকে মেয়েটাকে বাঁচাইবো? গাঁজা কয় কেজি খাইছো?

অবশেষে আহমদ মুসা ড্রাইভারের কাছ থেকে জোর করে চাবি নিয়ে গাড়িতে বসে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দিলো।

খন্ডচিত্র.....
***
কালো মাইক্রোটি আর মাত্র একশো মিটার দূরে। আহমদ মুসার নজরে পড়লো মাইক্রোটি। কিন্তু নেমপ্লেটটি অস্পষ্ট থাকার কারণে গাড়ির নাম্বার বোঝা যাচ্ছে না। রাত মাত্র ১০টা। কিন্তু জ্যামের কারণে গাড়ির গতি বাড়ানো যাচ্ছে না। একসময় গাড়িটিকে হারিয়ে ফেললো আহমদ মুসা।....

***
প্রশস্ত কোনো গাড়ি বারান্দা নয়, একটা ডাস্টবিনের পাশে কালো মাইক্রোটি রেখে একটি টিনের চালার বাড়িতে প্রবেশ করবে কালো পোশাকধারীরা।
আহমদ মুসা মেয়েটিকে উদ্ধার করার পরই আসবে পুলিশ। পুলিশ এসে উল্টো আহমদ মুসাকেই ধরে নিয়ে যাবে। মনে রাখবেন বাংলাদেশি পুলিশের কাছে কোনো যুক্তি চলে না। কার গুলিতে কে মরতো সেটা পরে দেখা যাবে। আহমদ মুসার হাতে পিস্তল এবং সে গুলি করেছে এটাই বড় কথা।
আহমদ মুসা ছাড়া পেল।
খুঁজতে গেল বিমানবন্দরের সেই ড্রাইভারকে। তার গাড়ির দাম পরিশোধ করতে। অনেক কষ্টে ড্রাইভারকে পেল। ড্রাইভার তো আহমদ মুসাকে দেখেই লোক জড়ো করে ফেললো। তারপর চিৎকার করে বলতে শুরু করলো, এই শালায় সেদিন আমার গাড়ি নিয়ে পালিয়েছিল।

আহমদ মুসা বিনয়ের সাথে বলবে ভাই আপনার গাড়ির দাম কত?
ড্রাইভার ৫লাখ টাকার গাড়ির দাম বলবে ১০লাখ টাকা। আহমদ মুসা ১০লাখ টাকা ড্রাইভারকে দিয়ে দেবে।
ড্রাইভার দেখবে আহমদ মুসার কাছে আরো টাকা আছে। তখন সবাই মিলে জোর করে সেগুলোও রেখে দিবে...!


পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি কাজের জন্য গুণতে হবে লক্ষলক্ষ টাকা ঘুষ।
যেই পরিবারের সাথেই আহমদ মুসার পরিচয় হবে, সবাই স্বার্থের জন্য তাকে ব্যবহার করবে।

যে বাড়িতেই কয়েকদিন আহমদ মুসা আশ্রয় নেবে, বিদায়ের সময় সবাই চাইবে আহমদ মুসার মাধ্যমে তাদের দরিদ্রতা দূর করতে।
.
আহমদ মুসা যদি হুট করে একদিন আমার বাসায় এসে পড়ে। যদি কখনো আমি তাঁর সাথে কোনো অভিযানে যাওয়ার সুযোগ পাই, আর যদি আমার হাতে দুয়েকজন শত্রু খতম করতে পারি, তাহলে আমার বলার ধরনটা হবে এমন— "দেখছেন মুসা ভাই, আমি যদি সময়মতো পিছনের লোকটাকে গুলি না করতাম, তাহলে কিন্তু সে আপনাকে গুলি করে দিত!"

আহমদ মুসা হেসে বলতো, সত্যি তুমি সময়মতো সঠিক কাজটি করেছো। ধন্যবাদ তোমাকে।
আমি তখন খুশিতে বলতাম, আজ যদি আমি আপনার সাথে অভিযানে না আসতাম তাহলে কী হতো ভেবে দেখেছেন...?
.
আমার বন্ধুর কোনো গাড়ি যদি আহমদ মুসা নষ্ট করে ফেলতো, তারপর যদি তেপাও এর মতো আমার বন্ধুকেও আহমদ মুসা ডাবল মূল্যের একটি গাড়ি কিনার টাকা দিয়ে যেতো, তাহলে হয়তো আমি বলতাম— দেখছিস, আহমদ মুসা শুধু তাকে কতগুলো টাকা দিয়ে গেলো, আমাদের তো কিছুই দিলো না!!!

বিদায়ের সময় হয়তো আমরা বাঙালিরা বলবো, মুসা ভাই আপনার তো দেশের বড়বড় সরকারী লোকদের সাথে হাত আছে। দয়াকরে আমাদেরকে একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেন না?...... ইত্যাদি
___________________
আরো অনেক কিছুই লেখা যেতো। কিন্তু কোনটা রেখে কোনটা লিখবো?
লেখাগুলো যদিও ফান করার উদ্দেশ্যে লিখেছি। কিন্তু এরদ্বারা আমাদের প্রকৃত চরিত্রও কিছুটা ফুটে উঠেছে।


সাইমুম সিরিজে আমরা পড়েছি, যখন কোনো একটা দেশকে আহমদ মুসা সকল বিপদ থেকে মুক্ত করে দিয়ে যেতো, তখন হয়তো সরাসরি সরকারপ্রধান তাঁকে কোনো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্মান করতেন, নয়তো যেকোনোভাবে তাঁকে উপযুক্ত মর্যাদা দিতেন।

কিন্তু বাংলাদেশকে যদি আহমদ মুসা সকল বিপদ থেকে মুক্ত করে দিয়ে যান, যাবার বেলায় হয়তো আমাদের সরকারপ্রধানরা বলবেন— "এবার এসেছেন ভাল কথা। ভবিষ্যতে আবার আসলে অবশ্যই আমাদের অনুমতি নিয়ে আসবেন".....!!!

- তরিকুল ইসলাম তুহিন, সোনারগাঁ/নারায়ণগঞ্জ।

      সাইমুম সিরিজ ৬১

  1.  সাইমুম সিরিজ 61 pdf 
  2. সাইমুম সিরিজ pdf 
  3. সাইমুম সিরিজ ৬১ pdf download
  4.  সাইমুম সিরিজ ৬০ pdf download 
  5. saimum series 61 
Next Post Previous Post