বাংলা ছোট গল্প "বিবাহ" লেখিকা ইয়াসিরা আবিশা ফাতা | Best Bangla Golpo 2024

বাংলা ছোট  গল্প "বিবাহ" লেখিকা ইয়াসিরা আবিশা ফাতা | Best Bangla Golpo 2024



ঘরে নাকি সুন্দরী বউ থাকলে পুরুষ মানুষের অফিস শেষ হতে দেরি কিন্তু ঘরে ফিরতে দেরি হয়না,
আর এদিকে আমার উনি.............
আজ সকালে আমাকে অফিস থেকে ফোন করে বলে....
-রুহি, আমার তিন দিনের ট্যুরে যেতে হবে আজকে, এখান থেকে সোজা রওনা হতে হবে।
মনটা খারাপ হলো তবুও তাকে বুঝতে দিলাম না,,
আস্তে করে শুধু বললাম
-আচ্ছা ঠিক আছে ফিয়ামানিল্লাহ নিজের খেয়াল রেখো।
বিয়েটা আমরা পালিয়ে করেছিলাম ১১ মাস ২৮ দিন আগে,,
আমার স্বামী তার পরিবারের একমাত্র ছেলে হবার সুবাদে তাকে পরিবার থেকে বিতাড়িত করা হয়নি
এবং আমাকে সহ একপ্রকার বাধ্য হয়েই মেনে নিতে হয়েছিল তার পরিবারের। 

Bangla Golpo - Bangla Small Story


যদিও আমার মা-বাবা এখনো আমাকে মেনে নেয় নি।
আমাদের বিবাহবার্ষিকী কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে শুরু হয়ে যাবে
কিন্তু সে তো আজকে ফিরবে না,, মন খারাপ হয়তো এজন্যই মূলত লাগছে।
পুরনো স্মৃতিগুলো মনে পড়ছে,,
আগে আমার জন্মদিন গুলোতে যেকোন উপায়ে হোক সে আমাকে একটা না একটা সারপ্রাইজ দিত।
আমি অনেক বেশি অবাক হতাম,, ওর প্রতিবার নতুন নতুন সারপ্রাইজ এ। 

আমাদের প্রেমের এক বছর পূর্তিতে,, সেই ঝুম বৃষ্টি ছিল সেই রাতে।
এমন সময় তার ফোন বন্ধ,, আমি টেনশনে একদম শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম একপ্রকার।
হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠল আমি আর নুসরাত জেগেছিলাম (আমার ছোট বোন) গেট খুলতে আমি গেলাম..
গেট খুলে দেখি কেউ নেই কিন্তু গেটের সামনে একটা বড়সড় বাক্স রাখা,,
সাথে কিছু প্যাকেট।
আমি বুঝেছি এই পাগলামি ইরাদ ছাড়া আর কারো হবে না,,
ঘড়ির কাটায় ঠিক বারোটা তখন মেসেঞ্জারে তার ভিডিও কল।
রিসিভ করতেই দেখি সে কাকভেজা হয়ে ঠিক আমার বাড়ির নিচে দাঁড়িয়ে আছে।

- হ্যাপি অ্যানিভার্সারি জান
রাগ অভিমান আর ভালোবাসায় আমার চোখ ভর্তি পানি।
-হ্যাপি এনিভার্সারি টু ইউ টু জান
কিন্তু তুমি কি পাগল এই রাতের বেলায় তোমাকে কে বলেছিল এতকিছু করতে??
- তোমার ভালোবাসা। একটা হাসি দিয়ে।
-তোমাকে নিয়ে আর পারিনা আমি।
-মাত্র এক বছর জান,, বাকিটা জীবন তো আমাকে নিয়ে পাড়ি দিতে হবে আপনার।
এরকম ভালোবাসা খুনসুটিভরা সম্পর্ক ছিল আমাদের,,
এখন এমন না যে ইরাদ আমাকে ভালোবাসে না বা ওর মায়া নেই,,
সবই আছে কিন্তু প্রায় সাত দিন ধরে ও কেমন কেমন যেন কথায় কথায় রাগ করছে। 

কিছু বলেও না ঠিকমত।
ভেবেছিলাম আজ সব ঝামেলা সব রাগ অভিমান মিটিয়ে ফেলবো
কিন্তু পেলামই না ওকে,, যাক বারোটা বাজলেই আজ রাতেও ভিডিও কল দিব।

-রুহি,,কই??(ইরাদের বড় বোন)
-জি আপা??
-তোমার দুলাভাইয়ের জন্য এক কাপ চা বানায় দাওতো,, আমার শরীরটা খারাপ লাগতেছে। -আচ্ছা আপা
-আর শুনো,, যখন চা বানাবে তো আমার জন্য ও বানায়ো, সাথে কয়েকটা পড়াটাও বানায়ো। 
মাংসের কিমা দিয়ে
- আপা মাংস তো সব ডিপে রাখা ছুটতে সময় লাগবে।
আলু পরোটা বানাই?
-না না মাংস দিয়ে বানাও সময় লাগুক।
আর ইরাদ ও তো বাসায় নাই তুমি তো ফ্রি আছো।
-আচ্ছা আপা
এদিকে বারোটা বাজতে মাত্র 1 ঘন্টা বাকী তাও কাজ কোন রকম শেষ হলে হবে না এর মাঝেই ওকে হয়তো কল দিতে হবে..

কিছুক্ষণ পর
-ভাবি ভাবি
-হ্যাঁ ফারিয়া বলো..
-তোমার ফোনটা দাও তো এক্ষুনি, কাল এক্সাম আছে। আমার ফোনে টাকা নেই।
কিছু বলার আগেই ফারিয়া আমার ফোনটা দৌড় দিয়ে নিয়ে চলে গেল।
আপা দুলাভাই এর খাবার দিয়ে ঘড়িতে দেখলাম 12:10 বাজে দৌড়ে ফারিয়ার রুমে গেলাম ইশারায় ফোন চাইলাম
ও হাত দেখিয়ে বললো পাঁচ মিনিট।
ঠিক বারোটা ত্রিশে আমি অবশেষে আমার ফোনটা হাতে পেলাম
দেখলাম ইরাদের কোন কল বা মেসেজ আসেনি।
তাও ঘরের দিকে যাওয়া শুরু করলাম, ভাবলাম সে হয়তো কাজের চাপে ভুলে গেছে,, মনটা যদিও খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল।
প্রথম অ্যানিভার্সারি তে আমি এটা কখনোই আশা করিনি।
কিন্তু কিছুই করার নেই,, রুমে যেয়ে ফোন করবো এই ভেবেই রুমের দিকে যাওয়া যে দরজা খুলতে নেব। 

বাংলা গল্প বিবাহ


তখনই
-মামনি মামনি (মাহি ইরাদের বোনের মেয়ে)
-আরে মাহি ঘুমাওনি এখনও?
-মামনি কালকে একটা প্রজেক্ট আছে, আব্বু-আম্মু আমাকে করে দিচ্ছে না, খালা ও দিচ্ছে না তুমি দিবে?
-আচ্ছা মা কিসের প্রজেক্ট?
- বউয়ের ছবি তুলে নিতে হবে..
-বউয়ের ছবি তুলে দিতে হবে??
আমি ভাবলাম একটা ক্লাস টু এর বাচ্চার কি এমন প্রজেক্ট হতে পারে? যে তাকে বউয়ের ছবি তুলে নিতে হবে? তাও মাহিকে বললাম এত রাতে বউ কোথায় পাব?
মাহি আমাকে জোর দিয়ে বলে
- তুমি সাজো না প্লিজ?
এত রাতে বউ সাজবো??
মাহিকে বললাম
-কালই লাগবে সোনা?
-হ্যা মামনী,, প্লিজ প্লিজ তুমি এখনই বউ সাজো।
-আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে আমি ঘর থেকে আমার জিনিসপত্র নিয়ে আসি..
-না আম্মুর জিনিসপত্র দিয়ে তোমার সাজা লাগবে আম্মু সব আমার ঘরে রেখে গিয়েছে আস মামনি তুমি সাজো তারাতারি..
দেখলাম খুব সুন্দর একটা লাল শাড়ি জর্জেটের লাল কিছু কাচের চুড়ি রাখা,, পরে নিলাম চোখে কাজল আর কপালে একটা ছোট টিপ দিয়ে হালকা সেজে কয়েকটা ছবি তুললাম তুলে মাহির স্কুলের যে ল্যাপটপ সেটার মধ্যে ছবিগুলো একটা ফাইল আকারে গুছিয়ে দিলাম। 

বাংলা রোমান্টিক গল্প



ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি দেড়টা বাজে,,ভাবলাম ইরাদ হয়তো ঘুমিয়ে গিয়েছে কল করবো কি না?
আমি আমার রুমে দিকে আসতে থাকলাম আর চিন্তা করলাম হয়তো কাল সকালেই ওকে উইশ করতে হবে এত রাতে ঘুম ভাঙ্গানো টা ঠিক হবে না।
না আমার রুমের দরজার লকে হাত দিতেই দেখি ভেতর থেকে দরজা লাগানো।
বেশ জোরে ধাক্কা দিলাম কিন্তু দেখি না দরজা লাগানো ভেতর থেকে।
কলিজার পানি শুকিয়ে গেল কারণ ইরাদ বাসায় থাকলেও কখনো দরজা লক করে না।
বাড়িতে সবাই ঘুম।
এত রাতে দরজা লক ভিতর থেকে..
কিভাবে কি??
তিনবার আয়াতুল কুরসি পড়ে বুকে ফু দিলাম। ভাবলাম এবার শেষ একটা ধাক্কা দিব,, যদি দরজা খোলা থাকে তাহলে তো খুলল।
আর নাহলে সবাইকে ডেকে নিয়ে আসব।
যেই কথা সেই কাজ,,
দরজা ধাক্কা দিতেই দেখি দরজা খোলা,, রুমের লাইট বন্ধ। ভেতরে ঢুকে সুইচের দিকে হাত বাড়াতে কে যেন পেছন থেকে দরজাটা লাগিয়ে দিলো।
যেই চিৎকার করতে যাবো তখনই আমার মুখ হাত দিয়ে কে জানো চেপে ধরল..

(আগামী পর্বে শেষ করে দিবো ইনশাআল্লাহ)

লাইট এর সুইচ এর দিকে হাত বাড়াতে কে যেন পেছন থেকে দরজা লাগিয়ে দিল,, যেই চিৎকার করতে যাব ওমনি আমার চিরচেনা আর সব থেকে ভালবাসার কন্ঠে শুনতে পেলাম
-হ্যাপি অ্যানিভার্সারি জান।
ভয় যেন নিমিষেই দূর হয়ে গেলো কারণ সে আর কেউ নয় আমার স্বামী,,
ইরাদ কে দেখে খুশিতে আমার চোখ থেকে পানি পড়তে শুরু করে।
লাইট জ্বালিয়ে দেখলাম ইরাদ আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে ওর চোখেও পানি।
আমার দিকে হাত বাড়িয়ে সে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে আমি তাকে জড়িয়ে ধরে খুব কান্না করলাম হয়তো ৭-৮ দিন পরে ওর আজকের চাহনি,, আজকের হাসি,, ঠিক সেই পুরনো ইরাদের মতো যাকে আমি তাকে ভালোবেসেছিলাম।
ইরাদ আমায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো -সরি, জান.. সাতটা দিন তোমাকে কষ্ট দেবার জন্য.. তোমার সাথে কথা বলিনি ঠিকমত.. তোমাকে শুধুমাত্র আজকে সারপ্রাইজ করার জন্য..
এতক্ষণ যেন একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম ইরাদের কথা দিয়ে আমার ঘোর ভাঙলো। ওর বুক থেকে মাথা তুলে দেখলাম আমাদের রুম টা খুব সুন্দর করে ও ডেকোরেশন করেছে। আমাদের প্রথম দেখা হবার পরে যে ছবিটা তুলেছিলাম সেটা বড় করে খাটের উপরে লাগানো। রুমে খুব সুন্দর বেলুন দিয়ে ডেকোরেশন করা, বিছানায় ছয়টা বক্স আর একটা কেক কিছু চকলেট।

বাংলা প্রেমের গল্প ২০২৪



ইরাদ আমাকে গিফট গুলো দেখিয়ে বলল
-বের করে সব দেখো তোমার পছন্দের জিনিস আনার চেষ্টা করেছি।
আমি বললাম
-পরে দেখবো
সে বলল
-না এখনই সব খুলে দেখো..
যে কথা সেই কাজ
আমিও এক এক করে সব খুলে দেখতে শুরু করলাম, প্রথম প্যাকেটে ছিল আমাদের অ্যালবাম এ পর্যন্ত আমরা যত ছবি তুলেছি সেগুলো আর এক প্যাকেট ছিল অনেকগুলো কাচের চুড়ি আরেক প্যাকেটে কিছু শাড়ি আরেক প্যাকেটে অনেক কসমেটিকস এরকম করে আমার নিত্য প্রয়োজনীয় যে সকল জিনিস পাতি তার সবই ও নিয়ে এসেছে।
এসব দেখে বেশ খুশি লাগল,,
কিছুক্ষণ পরে মনে হলো এগুলো তো বেশ টাকা খরচ হয়ে গেছে।
ইরাদ এত বেশি টাকা ও কামায়না যে এতকিছু একবারে কিনে ফেলা সম্ভব।
তার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম
-এত কিছু কিভাবে করলে?
-রুহি তোমার মনে পড়ে আমাদের বিয়ের আগে আমি অফিস থেকে পাঁচটায় বাড়ি ফিরতাম কিন্তু বিয়ের 2 মাস পর থেকে আমি রাত দশটার দিকে বাড়ি ফিরি?
-হ্যাঁ মনে আছে আমার। প্রেমের গল্প
-হ্যাঁ এই সময়টায় আমি পার্ট টাইম জব করি। বিয়ের পর থেকে তুমি তোমার অনেক শখ জলাঞ্জলি দিয়েছো,, কখনো মুখ ফুটে কিছু চাও না।
কিন্তু আমি চেষ্টা করি তোমার সব আশা পূর্ণ করার জন্য,, জানি আমি অতটা যোগ্য এখনো হয়ে ওঠেনি কিন্তু আমি চেষ্টায় কোনো ত্রুটি রাখতে চাইনা।
আমায় খাটে বসিয়ে নিজে মেঝেতে বসে আমার হাত দুটো ধরে বলল
- আমার বাসায় তোমাকে যে খুব আদরে রাখে তা কিন্তু না , ফারিয়া আর তোমার বয়স প্রায় এক। কিন্তু মা বাবা তোমাকে সম্পূর্ণ ফারিয়ার চোখে দেখে না। যদিও তুমি মুখ ফুটে কখনো বলো না, কিন্তু আমার চোখে ধরা পড়ে, যেই মেয়ে আগে কখনো রান্না করেনি সেই মেয়ে আমার জন্য সারাটা দিন খাটাখাটুনি করে। রান্নাবারা করে হাসিমুখে। নিজের পছন্দ-অপছন্দ সব ভুলে গিয়েছে শুধুমাত্র আমার জন্য তার ছোটখাটো খেয়াল যদি আমি রাখতে না পারি তাহলে কেমন স্বামী হলাম??
ও কথাগুলো বলছে আর আমার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝরছে
ওর হাত দুটো আরো শক্ত করে ধরলাম
-রুহি আমি চাইলেও আমার পরিবারের কারো ব্যবহার বা দুনিয়ার কারো ব্যবহারই তোমার প্রতি পাল্টাতে পারবোনা। কিন্তু হ্যাঁ আমি চাইলে সবাই যেরকম ব্যবহার করুক না কেন তোমার সাথে তোমাকে সুখী করতে পারব,, নিজের ব্যবহার,, নিজের ভালোবাসা দিয়ে।
তোমার সব অপূর্ণ ইচ্ছা গুলোকে নিজের অপূর্ণ ইচ্ছা মনে করে পূরণ করতে চেষ্টা করলে,, আমি তোমাকে সুখী রাখতে পারব।
তুমি কার?? তুমি তো আমারই।
তাহলে আমি কেন তোমার সব ইচ্ছা কে নিজের ইচ্ছা করে নিব না?
তুমি আমার জন্য তোমার পুরো পরিবার ছেড়ে এসেছ,, এত বড় ত্যাগ করেছ,, সেটা ধরতে গেলে আমি তোমার জন্য কিছু করতে পারি না।
- তুমি এরকম বলোনা জান।
তুমি আমার জন্য অনেক করো।
-আমি কিছুই করতে পারিনা তোমার জন্য সত্যি বলতে কি জানো? মাঝে মাঝে তোমাকে অনেক কিছু দিতে ইচ্ছা করে অনেক বেশি। কিন্তু বাসার ভাড়া সব খরচ মিলিয়ে মাস শেষে সেভিংস করে তেমন কিছু করতে পারিনা তোমার জন্য।
- তুমি একদম পাগল,, আমার কাছে তুমি থাকলেই হলো আর কিছু লাগবে না। আমি সবার সব সহ্য করে নিতে পারি আর পারব ইনশাআল্লাহ। শুধু তোমার থেকে পাওয়া কষ্ট সহ্য হয়না। তুমি সারাজীবন আমাকে এভাবে ভালোবেসে যাবে ইরাদ।
সত্যি আমার আর কিছু চাইনা,,
-আমি আজীবন তোমাকে অনেক ভালোবাসবো ইনশাআল্লাহ।
এখন জলদি করে কেকটা কেটে নেন ম্যাডাম। আপনার ফেভারিট কেক নিয়ে এসেছি। 
-ওয়াও, ঠিক আছে এই বলেই আমরা দুজন মিলে সুন্দর করে কেক কাটলাম।
ইরাদকে একটু খাইয়ে দিয়ে পুরোটা কেক নিয়ে আমি বসে পড়লাম।
কারণ ভ্যানিলা কেক আমার সবথেকে বেশি প্রিয়,,
-একদম মাইর দিব যদি এখন ডিনার না করে কেক খাও।
-কেক দিয়েই তো ডিনার হয়ে যাবে।
- জি না আপনি এখন ডিনার করবেন..
-আমি যে রাতে খাইনি কিভাবে বুঝলে?
-দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র বউ আমার বুঝবোনা?
এরপর ইরাদ আমায় নিজ হাতে খাইয়ে দিলো।
-জান, আজকে বিকেলে কিন্তু আমরা ঘুরতে যাব।
-কিন্তু মা??
-মাকে ফারিয়া, আপু আর দুলাভাই ওরা সবাই ম্যানেজ করে নেবে।
আজকে ওইসব আমি একা করতে পারতাম না যদি ওরা আমাকে সাহায্য না করতো।
আই এম সরি জান তোমাকে দিয়ে এতগুলো কাজ করানোর জন্য এত রাতে। ছোট গল্প
কিন্তু কি করবো বলো?
-থাক কিছু হবে না বাদ দাও আমি কিছুই মনে করিনি।
-জানো রুহি তুমি তোমার মিষ্টি আচরণ দিয়ে সবার মনটা এভাবে জয় করে নিয়েছ যে সবাই তোমাকে খুব ভালবাসে।
আব্বা-আম্মা এখনো হয়তো পুরোপুরি ভাবে মেনে নিতে পারেনি,, তবে ইনশাআল্লাহ একটা সময় তারাও তোমার মর্ম বুঝবে।
আর হ্যা জান আমি তোমার কাছে মাফ চাই আমার পরিবারের থেকে তোমার সাথে যে খারাপ আচরণ করা হয় সেগুলোর জন্য।
-এগুলো কি বলছ তুমি?
আমি কি পর নাকি তোমার পরিবার আমার পরিবার একই কথা।
আমি কিছুই মনে করিনা আর আব্বা আম্মা তো আমার আব্বা আম্মার মতই।
নিজের বাবা-মা বকলে মানুষ ধরে না কিন্তু শ্বশুর-শাশুড়ি বকলেই খুব রাগ হয়।
কেন?
আমি এই ধরনের না আমি কিছুই মনে করি না। তুমি জানো এটা ভালোমতোই,, তাহলে বারবার এই কথা বলতে হবেনা।
আমাকে পর করে দিও না প্লিজ।
আর শুনুন মিস্টার হাজবেন্ড পরিবার কে কখনোই আপনার একার ভাববেন না। পরিবারটা আমাদের দুজনের।
যদি কেউ নাও পাল্টায় তাও আমি সব মেনে নিতে পারবো হাসিমুখে কিন্তু একটাই শর্ত আপনার কিন্তু এরকমই থাকা লাগবে আজীবন।
- হ্যাঁ আজীবন আমি এরকমই থাকবো ইনশাআল্লাহ।
(শেষ)
*জীবনটা অনেক বেশি বড় নয়,, কিন্তু এইটুকু সময় অনেক ঘাত প্রতিঘাত পেরোতে হয় আমাদের।
এই সময় যদি ভালোবাসার মানুষটির হাত শক্ত করে ধরে বলে
- আমি আছি তোমার জন্য
তাহলে সবকিছু যতই কঠিন হোক না কেন সহজ হয়ে যায়।
রুহির জীবনটা হচ্ছে বাংলাদেশের সাধারন দশটা মেয়ের জীবনের কাহিনী।
এদের বেশি কিছু চাই না শুধু চাই ভালবাসার মানুষটার একটু মানসিক সহযোগিতা।
তাহলেই তাদের কষ্টগুলো আর কষ্ট থাকেনা। সবকিছু হাসিমুখে সহ্য করে নিতে পারে।
নিজের জীবন সঙ্গীকে খুশি করতে,, ছোট ছোট জিনিস গুলো করতে বেশি টাকার প্রয়োজন নেই প্রয়োজন শুধু একটু ভালোবাসা ও সম্মানের।
যা সবার প্রাপ্য।
নিজে ভালো থাকুন নিজের অর্ধাঙ্গিনীকে ভালো রাখুন।
নিজের স্বামীকে ভালোবাসুন সাথে নিজের স্বামীর পরিবারকেও ভালোবাসুন।
কেননা, কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়। আর ভালোবাসা জিনিসটা অনেক সুন্দর। এর বদলে কখনো ঘৃণা আসেনা একটা না একটা সময় ভালোবাসা চলেই আসে। ২টা মানুষের চেষ্টার ফলে একটা সুন্দর পরিবার গঠিত হয়।*


বিবাহ 
Yasira Abisha Fatha (May Be. যাচাই করিনি সত্যিই তার লেখা কিনা)
Next Post Previous Post